ট্রাম্পের ধারণা, আমেরিকার মন্দা দরকার? পুরোনো ক্ষত এখনো শুকোয়নি অনেকের!

যুক্তরাষ্ট্রে আবারও মন্দা আসার আশঙ্কা বাড়ছে, উদ্বিগ্ন বিশ্ব অর্থনীতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা (recession) আসার সম্ভাবনা ক্রমেই বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতির উপর এর প্রভাব কেমন হবে, তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ। সম্প্রতি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই ধরনের পরিস্থিতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এর আগে, মার্কিন সরকারের নীতি নির্ধারকদের কেউ কেউ এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের কারণে অর্থনীতির ‘ডি-টক্স’ সময় আসতে পারে, যা মন্দা ডেকে আনতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য এর প্রভাব কেমন হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করা দরকার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মন্দা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে। এর ফলে বেকারত্ব বাড়ে, মানুষের আয় কমে যায়, ঋণের বোঝা বাড়ে এবং মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

এমনকি, মাদক ও অ্যালকোহলের ব্যবহারও বেড়ে যেতে পারে। অতীতে বিভিন্ন মন্দায় নিম্ন আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মন্দা পরিস্থিতিতে সেখানকার বাজারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের উপর কেমন প্রভাব পড়বে, সেটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক সেখানে কাজ করেন এবং তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

যদি যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তবে শ্রমিকদের কাজ হারানোর সম্ভাবনা বাড়বে। এর ফলে তাদের আয়ে টান পড়বে, যা রেমিট্যান্সের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এছাড়া, বিশ্ব অর্থনীতির উপর এর প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং বিভিন্ন পণ্যের দামেও পরিবর্তন আসতে পারে।

অতীতে বিভিন্ন মন্দার অভিজ্ঞতা থেকে দেখা যায়, এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব থাকে। বিশেষ করে যারা নতুন করে কর্মজীবনে প্রবেশ করে, তাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে।

২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দায় অনেক তরুণ তাদের কাঙ্ক্ষিত চাকরি পায়নি। অনেকে পড়াশোনা শেষ করে ভালো বেতনে চাকরি করতে পারেননি।

উদাহরণস্বরূপ, লরা নাতালির কথা বলা যায়। ২০০৮ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। সেই সময়ে চাকরির বাজার ছিল খুবই খারাপ।

তিনি একটি কল সেন্টারে সামান্য বেতনে কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মন্দা কাটিয়ে উঠতে সরকারের উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী শক্তিশালী করা এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তা বাড়ানো প্রয়োজন।

এছাড়াও, বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সতর্ক থাকতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির এই সম্ভাব্য মন্দা শুধু দেশটির জন্যই উদ্বেগের বিষয় নয়, বরং এর প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হতে পারে।

তাই, বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলো বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া এখন জরুরি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *