যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় রেলওয়ে কোম্পানি, অ্যামট্রাকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) স্টিফেন গার্ডনার আকস্মিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। বুধবার এই খবরটি আসে, যা দেশটির যাত্রী পরিবহণ খাতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এই পদত্যাগের কারণ হিসেবে অনেকে মনে করছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গার্ডনারের পদত্যাগের পেছনে ট্রাম্প প্রশাসনের চাপ ছিল। ট্রাম্প এর আগে অ্যামট্রাকের বাজেট কমানোরও চেষ্টা করেছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে গার্ডনারের এই সিদ্ধান্ত বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
তবে, গার্ডনারের উত্তরসূরি কে হবেন, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি।
এদিকে, এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে, বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্ক অ্যামট্রাককে বেসরকারি খাতে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। তিনি এটিকে ‘লজ্জাজনক’ বলেও মন্তব্য করেন এবং চীনের বুলেট ট্রেনের মতো উন্নত যাত্রী পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে এর তুলনা করেন।
মাস্কের এই মন্তব্য এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি এই মুহূর্তে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।
গার্ডনার ১৯৯০ এর দশকে অ্যামট্রাকে ইন্টার্ন হিসেবে যোগ দেন এবং ২০১৬ সাল থেকে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারীর সময় অ্যামট্রাক বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল।
সেসময় যাত্রী সংখ্যা কমে গিয়েছিল, তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
২০২৪ অর্থবছরে অ্যামট্রাক যাত্রী পরিবহণে নতুন রেকর্ড গড়েছে। এই সময়ে প্রায় ৩ কোটি ২৮ লক্ষ যাত্রী ভ্রমণ করেছেন, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১৫% বেশি।
এছাড়া, টিকিটের মাধ্যমে আয় হয়েছে প্রায় ২৫০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকার সমান। গত অর্থবছরে সংস্থাটি প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৭ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা) পরিচালন লোকসান করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কম।
পরিবহন বিষয়ক সেক্রেটারি শন ডাফি ওয়াশিংটন ডিসির ইউনিয়ন স্টেশন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার এবং সেখানকার আশ্রয়হীন ও অপরাধ প্রবণতা দূর করার জন্য অ্যামট্রাক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গার্ডনারের পদত্যাগের পর অ্যামট্রাক বোর্ড জানায়, তারা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং সেক্রেটারি ডাফির সঙ্গে একটি বিশ্বমানের যাত্রী রেল ব্যবস্থা তৈরি করতে আগ্রহী।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস