ভয়ংকর! ওডেসায় রাশিয়ার বোমা, থামছেই না!

যুদ্ধবিরতির আলোচনার মধ্যেই ওডেসায় রাশিয়ার ড্রোন হামলা, ক্ষতিগ্রস্ত আবাসিক ভবন ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র।

ইউক্রেনের বন্দর নগরী ওডেসায় রাশিয়ার ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। যদিও এর আগে, জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা সাময়িকভাবে বন্ধ করতে উভয়পক্ষের মধ্যে নীতিগতভাবে একটি চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার রাতের এই হামলায় আবাসিক ভবন, একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র এবং অন্যান্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, হামলার সময় চেক প্রেসিডেন্ট পেত্র পাভেল (Petr Pavel) ওডেসায় উপস্থিত ছিলেন। ওডেসা অঞ্চলের গভর্নর ওলেহ কিপারের (Oleh Kiper) ভাষ্যমতে, রুশ ড্রোনগুলো আবাসিক বহুতল ভবন ও একটি শপিং মলে আঘাত হানে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) মধ্যস্থতায় ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি সীমিত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে (Riyadh) উভয়পক্ষ আলোচনার জন্য প্রতিনিধি দল পাঠাবে। তবে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে কিনা বা কবে নাগাদ হবে, সে বিষয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।

হোয়াইট হাউস (যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) জানিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় জ্বালানি ও অবকাঠামো অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অন্যদিকে, ক্রেমলিন (রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয়) বলছে, চুক্তিটি মূলত জ্বালানি অবকাঠামোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি (Volodymyr Zelenskyy) এই চুক্তির আওতায় রেল ও বন্দর সুরক্ষারও দাবি জানিয়েছেন।

শুক্রবার ক্রেমলিন জানায়, তারা জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা বন্ধের নির্দেশ বহাল রেখেছে। তবে, তারা জোর দিয়ে বলেছে, এই চুক্তি কেবল জ্বালানি অবকাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত, ‘জ্বালানি ও অবকাঠামো’র সঙ্গে নয়। রাশিয়া, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগও এনেছে। তাদের দাবি, জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের আগেই ইউক্রেন একটি রুশ তেল ডিপোতে আঘাত হেনেছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ করেছে। জেলেনস্কি মঙ্গলবার ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার কয়েক ঘণ্টা পরই সুমি শহরের একটি হাসপাতালে হামলা হয়।

এদিকে, রাশিয়া যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগেই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তারা ওডেসায় ড্রোন হামলা চালানোর পাশাপাশি জাপোরিঝিয়ার (Zaporizhzhia) দক্ষিণাঞ্চলেও গোলাবর্ষণ করেছে।

আরেকটি ঘটনায়, শুক্রবার সকালে ইউক্রেন হয়ে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ রুশ পাম্পিং স্টেশনে আগুন লাগে। রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয়পক্ষই এই ঘটনার জন্য একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়েছে। রাশিয়া অভিযোগ করেছে, ইউক্রেন ওই স্টেশনে আঘাত হেনেছে। যদিও ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী তাদের দায় অস্বীকার করে জানিয়েছে, রুশ বাহিনীই সেখানে একাধিকবার গোলা বর্ষণ করেছে।

প্রসঙ্গত, ইউরোপের অনেক দেশ রাশিয়া থেকে গ্যাস সরবরাহ কমালেও, হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়ার (Slovakia) মতো দেশগুলো এখনো রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল। এই গ্যাস সরবরাহ রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলের (Kursk) সুজা শহর দিয়ে যায়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *