বিখ্যাত ফরাসি অভিনেতা জেরার্ড দেপার্দিয়েউ-এর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের মামলা সোমবার প্যারিসে শুরু হতে যাচ্ছে। জানা গেছে, ২০২১ সালে একটি সিনেমার শুটিংয়ের সময় দুই নারীর ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
৭৫ বছর বয়সী দেপার্দিয়েউ, যিনি ২০০টির বেশি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন সিরিজে অভিনয় করেছেন, তার বিরুদ্ধে এর আগেও প্রায় ২০ জন নারী অসদাচরণের অভিযোগ এনেছেন। তবে এটিই প্রথম ঘটনা যা আদালতে বিচারের জন্য উঠছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে দেপার্দিয়েউ-এর আইনজীবী জেরেমি আসুস জানিয়েছেন, তার মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যা। অসুস্থতার কারণে শুনানির তারিখ পেছানো হলেও অভিনেতা আদালতে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি কৌঁসুলিদের ভাষ্যমতে, ২০২১ সালে ‘লে ভোলেত ভের্তস’ (সবুজ শাটার) সিনেমার শুটিং চলাকালে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, দেপার্দিয়েউ সিনেমার সেটে এক নারীর শরীর স্পর্শ করেন, তাকে নিজের দিকে টেনে নিয়ে আসেন এবং অশ্লীল কথাবার্তা বলতে বলতে তার কোমর, নিতম্ব ও স্তনেও হাত দেন।
ঘটনার সময় তিনজন ব্যক্তি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। দ্বিতীয় নারীর প্রতিও একই ধরনের আচরণ করার অভিযোগ রয়েছে এই অভিনেতার বিরুদ্ধে। তবে নির্যাতনের শিকার নারীদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
এই ঘটনার আগে ২০১৮ সালে এক তরুণী অভিনেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দেপার্দিয়েউয়ের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়। সেই মামলাতেও প্রসিকিউটররা বিচার চেয়েছেন।
ফ্রান্সে #MeToo আন্দোলন, যা যৌন সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যুক্তরাষ্ট্রে এর মতো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। দেপার্দিয়েউয়ের বিচার সম্ভবত ফ্রান্সের বিচার বিভাগের সবচেয়ে আলোচিত #MeToo বিষয়ক মামলা হতে যাচ্ছে।
সম্প্রতি, ফরাসি পরিচালক ক্রিস্টোফ রুজ্জিয়ার বিরুদ্ধে অভিনেত্রী অ্যাডেল হ্যানেলকে অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যৌন নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। #MeToo আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ফরাসি পরিচালক ও অভিনেত্রী জুডিথ গড্রেচ এক সাক্ষাৎকারে জানান, এই বিচারগুলো আন্দোলনের অগ্রগতির প্রমাণ।
তিনি বলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রভাবশালী পুরুষদের বিরুদ্ধে কথা বলা নারীদের এখন আর পাগল হিসেবে দেখা হয় না।” তবে, ফরাসি চলচ্চিত্র জগতে পুরুষদের মুখ খোলার ঘটনা এখনো বিরল।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা