ফিজিতে সবুজ ইগুয়ানা কীভাবে পৌঁছাল? বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা সম্ভবত গাছের ভেলা ধরে আট হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে!
বহু বছর ধরেই বিজ্ঞানীরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলেন যে, প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে অবস্থিত ফিজির দ্বীপগুলোতে ইগুয়ানা নামক সরীসৃপ প্রজাতিরা কীভাবে এলো। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন কোটি বছর আগে উত্তর আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ইগুয়ানার পূর্বপুরুষরা সম্ভবত গাছের ভেলা বা অন্য কোনো ভাসমান উদ্ভিদের সঙ্গে আট হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়েছিল।
এই পথটি পৃথিবীর পরিধির পাঁচ ভাগের এক ভাগেরও বেশি!
গবেষকরা বলছেন, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে জানা গেছে, ফিজিতে বসবাস করা ইগুয়ানা এবং উত্তর আমেরিকার মরুভূমিতে পাওয়া ডাইনোসোরাস (Dipsosaurus) প্রজাতির ইগুয়ানার মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এই তথ্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ফিজির ইগুয়ানা সম্ভবত উত্তর আমেরিকা থেকেই এসেছে।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সাইমন স্কারপেত্তার নেতৃত্বে একদল গবেষক এই গবেষণাটি করেছেন। গবেষণায় বলা হয়েছে, ইগুয়ানা সম্ভবত ঝড়ের কারণে উপড়ে যাওয়া গাছ বা অন্য কোনো উদ্ভিদের সঙ্গে আটকা পড়ে সমুদ্র পাড়ি দিতে বাধ্য হয়েছিল।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, ইগুয়ানা দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার জন্য বেশ উপযুক্ত। তারা প্রচণ্ড গরম, খাবার ও পানির অভাব— সবকিছু সহ্য করতে পারে। শীতল রক্তের প্রাণী হওয়ায় এরা উষ্ণ রক্তের প্রাণীদের তুলনায় অনেক কম খাবার খেয়েও বাঁচতে পারে।
গবেষকদের ধারণা, এই দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রা সম্পন্ন করতে ইগুয়ানা প্রজাতির কয়েক মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত সময় লেগেছিল।
এই গবেষণার ফলাফল শুধু ইগুয়ানা প্রজাতি নিয়েই নতুন তথ্য দেয় না, বরং এটি পৃথিবীর বিভিন্ন দ্বীপে কীভাবে অন্য প্রজাতির বিস্তার ঘটেছে, সে সম্পর্কেও ধারণা দেয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই ধরনের গবেষণা ভবিষ্যতে সমুদ্রপথে অন্য কোনো জীবের দূরবর্তী স্থানে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করবে।
তথ্য সূত্র: CNN