লন্ডন: বিদ্যুতের আগুনে বন্ধ বিমানবন্দরের কার্যক্রম, প্রথম ফ্লাইট অবতরণ!

লন্ডনের প্রধান হিথ্রো বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডের কারণে বিমান চলাচল ব্যাহত, বিশ্বজুড়ে যাত্রী দুর্ভোগ

লন্ডন, ২১ মার্চ, ২০২৫: লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের কাছে একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে আগুন লাগার কারণে বিমানবন্দরের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত এই বিমানবন্দরে বিমান চলাচল সম্পূর্ণরূপে ব্যাহত হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের কার্যক্রম আংশিকভাবে পুনরায় চালু করা হলেও, এর প্রভাব এখনো বিদ্যমান এবং কয়েক দিন ধরে চলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি বিমান বিমানবন্দরের রানওয়েতে অবতরণ করার মধ্য দিয়ে প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর বিমানবন্দরের কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।

এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে কমপক্ষে ১,৩৫০টি ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে, যার ফলে কয়েক লক্ষ যাত্রী ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের কাছে অবস্থিত নর্থ হাইড বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে আগুন লাগার পর তারা বিকট শব্দ এবং আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পান।

জরুরি বিভাগের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। প্রায় ৭০ জন দমকলকর্মী আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেন এবং প্রায় ১৫০ জন স্থানীয় বাসিন্দাকে তাদের বাড়িঘর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

আগুনের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে কর্তৃপক্ষের ধারণা, এর পেছনে কোনো নাশকতার প্রমাণ মেলেনি।

মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের গোয়েন্দারা এই ঘটনার তদন্ত করছেন, কারণ এর সঙ্গে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা জড়িত।

হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের জরুরি অবস্থার জন্য প্রস্তুত করা ব্যাকআপ ব্যবস্থা কাজ করেছে, কিন্তু বিমানবন্দরের পুরো কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে তা যথেষ্ট ছিল না।

বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে যাত্রীদের বিমানবন্দরে আসার আগে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত থাকতে বলা হয়েছে।

এই ঘটনার জেরে যুক্তরাজ্যের জরুরি অবস্থার মোকাবিলার প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি অগ্নিকাণ্ডের কারণে যদি এত বড় একটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দেশের গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো কতটা সুরক্ষিত, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে।

ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের পুনরায় টিকিট বুকিং এবং বিমান ও ক্রুদের পুনর্বিন্যাস করতে হবে।

এই ঘটনার কারণে অনেক ফ্লাইটকে অন্য বিমানবন্দরে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

কিছু ফ্লাইট প্যারিসের চার্লস ডি Gaulle বিমানবন্দর, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো বিমানবন্দর এবং আয়ারল্যান্ডের শ্যানন বিমানবন্দরে অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছে।

যাত্রীদের বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, হিথ্রো বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক ভ্রমণের জন্য বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দর।

গত জানুয়ারিতে এখানে ৬৩ লক্ষাধিক যাত্রী চলাচল করেছে, যা ছিল বিমানবন্দরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *