ট্রাম্পের ঘোষণা: আসছে ষষ্ঠ প্রজন্মের F-47 যুদ্ধবিমান, বোয়িং প্রস্তুত!

যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানির তৈরি করা নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এফ-47 তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার ওভাল অফিসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী (সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স) পেট হেগসেথের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে তিনি এই ঘোষণা দেন।

ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী ষষ্ঠ প্রজন্মের প্রথম যুদ্ধবিমান তৈরি করতে যাচ্ছে, যা ‘এফ-47’ নামে পরিচিত হবে। বিমানের প্রযুক্তি এতটাই উন্নত যে এর কাছাকাছি কোনো কিছুই নেই। বোয়িং কোম্পানিকে এই অত্যাধুনিক বিমানের তৈরির চুক্তি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ট্রাম্প আরও বলেন, এফ-47 বিমানের একটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ প্রায় পাঁচ বছর ধরে আকাশে উড়ছে। যদিও বিমানটির ডিজাইন এবং কারিগরি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। তবে, ট্রাম্পের দাবি, এই বিমান মনুষ্যবিহীন উড়ন্ত যান বা ড্রোন-এর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে সক্ষম।

সামরিক খাতে ড্রোন-এর ব্যবহার বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান যুদ্ধে ড্রোন-এর কার্যকর ব্যবহারের বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে। ট্রাম্পের মতে, এফ-47 যুদ্ধবিমান একইসঙ্গে অনেকগুলো ড্রোনের সঙ্গে উড়তে পারবে। অন্য কোনো বিমানের এই ক্ষমতা নেই।

তবে, বোয়িং কোম্পানির প্রতি ট্রাম্পের সমালোচনার ইতিহাস রয়েছে। বিশেষ করে নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান (Air Force One) তৈরি এবং অন্যান্য প্রকল্পে অতিরিক্ত খরচ ও সময় নেওয়ার কারণে তিনি অসন্তুষ্ট ছিলেন। ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, “বোয়িং যদি কাজটি শেষ করতে পারে তবে আমরা নতুন এয়ার ফোর্স ওয়ান পাব।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, কেসি-46 ট্যাংকার বিমান (KC-46 tanker) তৈরির ক্ষেত্রেও বোয়িং নির্ধারিত সময়ের চেয়ে সাত বছর পিছিয়ে আছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই বিলম্ব ট্রাম্প প্রশাসনের দ্রুত এবং দক্ষতার সঙ্গে প্রকল্প সম্পন্ন করার লক্ষ্যের পরিপন্থী।

ইতিহাসে, বোয়িং কোম্পানি বিশ্বযুদ্ধের সময় বি-17 এবং বি-29 বোমারু বিমান তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করে। বর্তমানে তারা এফ-15ইএক্স ঈগল (F-15EX Eagle) এবং এফ/এ-18 সুপার হর্নেট (F/A-18 Super Hornet) তৈরি করে, যা মার্কিন বিমান বাহিনী এবং নৌবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে, এই প্রজন্মের অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরির প্রকল্প, যা পূর্বে নেক্সট জেনারেশন এয়ার ডমিনেন্স (NGAD) নামে পরিচিত ছিল, তা মূলত লকহিড মার্টিন-এর তৈরি এফ-35 লাইটনিং II বিমানের চেয়েও উন্নত হবে। যদিও এফ-35 নির্মাণে অতিরিক্ত খরচ এবং সময়ক্ষেপণের অভিযোগ রয়েছে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে, অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান তৈরির এই প্রতিযোগিতা সামরিক শক্তি প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এফ-47 বিমানের ঘোষণা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পাশাপাশি সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর একটি উদাহরণ। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের উন্নয়ন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশের বিমান বাহিনীর জন্য বর্তমানে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান কেনা বা তৈরির কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা, তা এখনো জানা যায়নি। তবে, প্রতিবেশী দেশগুলোর সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তির অগ্রগতির দিকে লক্ষ্য রেখে, বাংলাদেশেরও নিজস্ব সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *