যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে যাওয়া ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরিত লিঙ্গ) ব্যক্তিদের জন্য ডেনমার্ক এবং ফিনল্যান্ড তাদের ভ্রমণ সংক্রান্ত পরামর্শ হালনাগাদ করেছে। সম্প্রতি, বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশও একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে, কারণ আমেরিকান সীমান্তে তাদের ভ্রমণের সময় কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ডেনমার্ক সরকার তাদের নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছে, পাসপোর্ট বা অন্যান্য ভ্রমণ documents-এ যাদের লিঙ্গ পরিচয় ‘X’ চিহ্নিত করা হয়েছে বা যারা লিঙ্গ পরিবর্তন করেছেন, তারা যেন যাত্রা করার আগে কোপেনহেগেনে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা ভ্রমণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা জেনে নিতে পারবেন।
এই পরিবর্তনের কারণ হিসেবে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পুরনো প্রশাসন ট্রান্সজেন্ডার ও নন-বাইনারি (যাদের লিঙ্গ নারী বা পুরুষের সংজ্ঞায় পড়ে না) অধিকারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদন ফরমগুলোতে শুধুমাত্র পুরুষ অথবা মহিলা—এই দুটি লিঙ্গ উল্লেখ করার সুযোগ রয়েছে। যেখানে ডেনমার্কের আইন নাগরিকদের ‘X’ চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে তাদের লিঙ্গ পরিচয় দেওয়ার অনুমতি দেয়।
ডেনমার্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম উল্লেখ করেনি। তবে তারা বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণ অনুমোদন প্রক্রিয়ার কারণে সমস্যা হতে পারে। এলজিবিটি+ ডেনমার্ক নামক একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা আশঙ্কা করছেন বিমানবন্দরে এইসব মানুষজনকে হয়রানির শিকার হতে পারে, অথবা তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে নাও দেওয়া হতে পারে।
একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে ফিনল্যান্ডও। তারা তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, পাসপোর্ট এবং জন্ম সনদে উল্লিখিত লিঙ্গের মধ্যে ভিন্নতা থাকলে, মার্কিন কর্তৃপক্ষ তাদের দেশে প্রবেশ করতে নাও দিতে পারে। জার্মানিও তাদের নাগরিকদের, বিশেষ করে যাদের পাসপোর্ট-এ ‘X’ চিহ্নিত করা আছে, তাদের যাত্রা করার আগে মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ করতে বলেছে।
যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারাও তাদের ভ্রমণ পরামর্শ পর্যালোচনা করেছেন। নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম ভাঙলে গ্রেপ্তার বা আটক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি জানা গেছে, এক ব্রিটিশ পর্যটককে ওয়ার্কিং ভিসার পরিবর্তে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ভ্রমণ করার কারণে ১০ দিন আটক করে রাখা হয়েছিল।
বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, কোনো ব্যক্তির যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মার্কিন সীমান্ত কর্তৃপক্ষের হাতেই থাকে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান