যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং হাজার হাজার যাত্রী দুর্ভোগে পড়েছেন। শনিবার সকাল থেকে বিমানবন্দরের কার্যক্রম ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও, এখনো অনেক ফ্লাইট বাতিল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে বিমানবন্দরের কাছে একটি বৈদ্যুতিক সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের কারণে এই বিপর্যয় ঘটে। এতে ব্রিটেনের বৃহত্তম এই বিমানবন্দরটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে ১৩৫০টির বেশি ফ্লাইট বাতিল করতে হয়। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে অন্তত দুই লক্ষাধিক যাত্রীর ওপর।
যুক্তরাজ্যের পরিবহন দপ্তর জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সাময়িকভাবে রাতের ফ্লাইটের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ জানিয়েছে, শনিবার তাদের নির্ধারিত ফ্লাইটের প্রায় ৮৫ শতাংশ চালু রাখার চেষ্টা করা হবে। সাধারণত, একটি শনিবার কোম্পানিটির প্রায় ৬০০টি ফ্লাইট পরিচালনা করার কথা।
ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে জরুরি বিভাগের কর্মীরা কাজ করছেন। প্রাথমিক তদন্তে কোনো সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি নিছক একটি দুর্ঘটনা।
হিথ্রো বিমানবন্দর ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। বিদ্যুত বিভ্রাটের কারণে বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায়, অনেক আন্তর্জাতিক রুটের ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে, যা বিভিন্ন দেশের যাত্রীদের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটগুলোর যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ন্যাশনাল গ্রিড জানিয়েছে, তাদের সাবস্টেশনে আগুন লাগার ঘটনা খুবই বিরল। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে এবং খুব শীঘ্রই বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হবে।
হিথরোর প্রধান নির্বাহী থমাস ওল্ডবাই ক্ষতিগ্রস্ত যাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের এই ঘটনা আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে একটি বড় ধরনের ধাক্কা। এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনার কারণে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান