মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যক্ষ্মা রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, গত এক বছরে দেশটিতে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর পেছনে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও অভিবাসন একটি প্রধান কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) -এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ১০,৩০০ জনের বেশি মানুষের শরীরে যক্ষ্মা ধরা পড়েছে। এই সংখ্যাটি আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৮ শতাংশ বেশি এবং ২০১১ সালের পর থেকে এটিই সর্বোচ্চ।
শুধু রোগীর সংখ্যাই বাড়েনি, সংক্রমণের হারও বেড়েছে উদ্বেগজনকভাবে। বিভিন্ন বয়সের মানুষের মধ্যে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে এবং দেশটির ৩৪টি রাজ্যে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যক্ষ্মা বৃদ্ধির পেছনে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও অভিবাসন একটি বড় কারণ। কারণ, অন্যান্য দেশ থেকে আসা অনেক মানুষের মধ্যে এই রোগের জীবাণু পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিরাও এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ক্যানসাস-সহ কয়েকটি রাজ্যে হঠাৎ করে যক্ষ্মা বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
ক্যানসাসে গত বছর যক্ষ্মা আক্রান্তের হার ১৪৮ শতাংশ বেড়েছে। আলাস্কা এবং হাওয়াই-এর মতো রাজ্যগুলোতেও আক্রান্তের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
যক্ষ্মা একটি মারাত্মক রোগ, যা ফুসফুসে আক্রমণ করে। এটি বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়, যখন আক্রান্ত ব্যক্তি হাঁচি বা কাশে।
সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হলে, এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। উনিশ শতকের শেষের দিকে, এই রোগটি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পরেছিল।
তবে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার এবং জনস্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ধীরে ধীরে এর প্রকোপ কমে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ। কারণ, যক্ষ্মা এখনো একটি মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সচেতনতা বৃদ্ধি ও দ্রুত রোগ নির্ণয় করা জরুরি।
যদিও এই প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে লেখা, তবুও এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে যক্ষ্মা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিভিন্ন দেশের সরকার এই রোগ নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আমাদের দেশও যক্ষ্মা নির্মূলে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস