যুদ্ধ বাড়ছে? ইসরায়েলের হামলায় লেবাননে নিহত, উত্তেজনা তুঙ্গে!

লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম সতর্ক করেছেন যে, ইসরায়েলের নতুন করে হামলার কারণে তার দেশ ‘নতুন যুদ্ধের’ ঝুঁকিতে রয়েছে। শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হওয়ার পর তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

লেবাননের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত আটজন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশুও রয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, তারা হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করছে।

এর আগে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা লেবানন সীমান্ত থেকে ছোড়া তিনটি রকেট প্রতিহত করেছে। এর জবাবে তারা লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা হিজবুল্লাহর রকেট লঞ্চারকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং এই ঘটনার জন্য হিজবুল্লাহকে দায়ী করেছে। তবে, হিজবুল্লাহ এক বিবৃতিতে জানায়, তারা ইসরায়েলে রকেট হামলার সঙ্গে জড়িত নয়।

ইসরায়েলের সেনাবাহিনী রেডিওর বরাত দিয়ে জানা গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়েছে এবং আগামী কয়েক ঘন্টায় আরো হামলা হতে পারে। গত নভেম্বরে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল।

লেবানন সরকার ইসরায়েলকে তাদের ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে না পারার জন্য দায়ী করেছে। গত নভেম্বরে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হলেও ইসরায়েল এখনো লেবাননের পাঁচটি স্থানে অবস্থান করছে। প্রধানমন্ত্রী সালাম বলেছেন, ‘যুদ্ধ ও শান্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা লেবাননের রয়েছে, এটা প্রমাণ করতে নিরাপত্তা ও সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন এক বিবৃতিতে দেশটির অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা এবং সহিংসতা উস্কে দেওয়ার নিন্দা করেছেন। তিনি সংঘাত আরও বাড়তে না দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটস সেনাবাহিনীকে লেবাননের সন্ত্রাসীদের ওপর জোরালোভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নেতানিয়াহু লেবাননের সরকারকে তাদের ভূখণ্ডে যা ঘটছে তার জন্য দায়ী করেছেন।

আল জাজিরার সাংবাদিক জেইনা খোদর বৈরুত থেকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে—এমন উদ্বেগে রয়েছেন লেবাননের কর্মকর্তারা। তিনি আরও জানান, লেবাননের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ কমিটির সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে আলোচনা করছেন।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী, যারা ‘ইউনিফিল’ নামে পরিচিত, তারাও সীমান্ত অঞ্চলের এই সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, এই পরিস্থিতিতে উত্তেজনা বাড়লে তা পুরো অঞ্চলের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে।

দোহা’র হামাদ বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুলতান বারাকাত আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যতদিন ইসরায়েলি দখলদারিত্ব চলবে, ততদিন প্রতিরোধও চলবে।’

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *