এমএলকে-এর গোপন এফবিআই ফাইল: ট্রাম্প কেন এত আগ্রহী?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের (এমএলকে) বিষয়ে ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর গোপন নথি জনসম্মুখে প্রকাশ করার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এই নথিতে কিং-এর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কিত কিছু গোপন তথ্য রয়েছে, যা ১৯৭৭ সাল থেকে সিল করা ছিল।

ট্রাম্প প্রশাসন চাইছে, এই ফাইলগুলো দ্রুত প্রকাশ করা হোক। হোয়াইট হাউসে এক বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, “তারা সবকিছু প্রকাশ করতে যাচ্ছে।”

এই নথিতে সম্ভবত কিং-এর ওপর এফবিআইয়ের নজরদারির টেপ ও লিখিত বিবরণ রয়েছে, যা তার মৃত্যুর আগে ধারণ করা হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, এতে কিং-এর নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কিছু ‘আপত্তিকর’ তথ্যও রয়েছে, যা কিং-এর ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ডের ‘সত্য’ জানার জন্য এফবিআই ফাইলগুলো দ্রুত প্রকাশের আবেদন করেছেন।

তবে এই ফাইলগুলো প্রকাশের পেছনে প্রশাসনের আসল উদ্দেশ্য কী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, এর মাধ্যমে সরকার জনসাধারণের কাছে সব তথ্য তুলে ধরতে চাইছে। আবার অনেকের ধারণা, নাগরিক অধিকার আন্দোলনের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির ব্যক্তিগত দুর্বলতাগুলো সামনে এনে ট্রাম্প প্রশাসন হয়তো তাদের রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে।

কারণ, ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে সরকার থেকে নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিং-এর পরিবার অবশ্য দ্রুত এই নথি প্রকাশের বিরোধীতা করছে। তাদের আশঙ্কা, এতে কিং-এর ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

ইতিমধ্যে, কিং-এর জীবনীকার জোনাথন এইগ এই বিষয়ে তার মতামত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “সাধারণভাবে আমি স্বচ্ছতার পক্ষে। আমাদের জানা উচিত এফবিআই কীভাবে কিং-এর সঙ্গে আচরণ করেছিল। আমার মনে হয়, ব্যক্তিগত জীবনে কিং কেমন ছিলেন, তার চেয়ে এটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এইগ আরও বলেন, “আমার উদ্বেগ হলো, সরকার যদি তড়িঘড়ি করে এই ফাইলগুলো প্রকাশ করতে চায়, তাহলে এর কারণ হতে পারে তারা কিং-এর ভাবমূর্তিকে খাটো করতে চাইছে। তারা যদি কিংকে খাটো করার উদ্দেশ্যে এই কাজ করে, তবে তারা ভুল করছে।”

এফবিআই কিং-এর ওপর নজরদারি চালানোর পাশাপাশি তাকে হেয় করার চেষ্টা করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এইগ বলেন, এফবিআই কিংকে হেয় করতে এবং নাগরিক অধিকার আন্দোলনকে দুর্বল করতে সফল হয়েছিল।

তারা গণমাধ্যমে কিং-এর ব্যক্তিগত জীবনের গোপন তথ্য প্রকাশ করে, যা গণমাধ্যমে কিংকে নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে। এমনকি কিং-এর দলের মধ্যেও বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল। তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *