অস্কারজয়ী অভিনেতা জিন হ্যাকম্যান এবং তাঁর স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়ার মৃত্যুরহস্য উন্মোচনে নয়া তথ্য প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ। গত ফেব্রুয়ারিতে নিউ মেক্সিকোর সান্টা ফে শহরে তাঁদের বাড়িতে পাওয়া গিয়েছিল এই দম্পতির মরদেহ।
সম্প্রতি প্রকাশিত বডি-ক্যাম ফুটেজ এবং অন্যান্য নথিপত্র থেকে জানা গেছে মৃত্যুর পেছনের নানা অজানা কথা।
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, হ্যাকম্যান দম্পতির বাড়ির ঠিকাদার জেস ক্যাসলার তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। এরপর তিনি তাঁদের বাড়িতে যান এবং সেখানে নিরাপত্তা রক্ষীর সঙ্গে দেখা করেন।
পরে, গত ২৬শে ফেব্রুয়ারি আরাকাওয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের বিষক্রিয়ায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তবে, পরবর্তীতে বিষয়টি নাকচ করে দেয় তদন্তকারীরা।
বডি-ক্যামের ফুটেজে সাক্ষীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁদের উদ্বেগের বিষয়টি উঠে আসে। তাঁরা জানান, “বিষয়টি স্বাভাবিক নয়, কেমন যেন অস্বাভাবিক”।
এছাড়াও, ঘটনাস্থল থেকে একটি মৃত কুকুরও উদ্ধার করা হয়।
তদন্তে জানা যায়, ৯৫ বছর বয়সী জিন হ্যাকম্যান হৃদরোগ এবং আলঝেইমার্স-এর মতো স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগছিলেন। অন্যদিকে, তাঁর ৬৪ বছর বয়সী স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়া হান্টাভাইরাস পালমোনারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
এই ভাইরাসটি মূলত ইঁদুরের মাধ্যমে ছড়ায়। জানা গেছে, হ্যাকম্যানের মৃত্যুর কয়েক দিন আগেই আরাকাওয়া মারা যান।
তবে, হ্যাকম্যানের মৃত্যুর সময় আরাকাওয়ার মৃত্যুর বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছিলেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ, তাঁর স্মৃতিভ্রংশ হওয়ার কারণে বিষয়টি জানার সম্ভাবনা কম।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আরাকাওয়াকে সবশেষ ১১ই ফেব্রুয়ারিতে জীবিত দেখা গিয়েছিল এবং ১৮ই ফেব্রুয়ারি হ্যাকম্যানের হৃদস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়।
হ্যাকম্যানের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ প্রকাশের বিরুদ্ধে আদালতে আবেদন করেছিলেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, হ্যাকম্যান জীবিতকালে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনকে সুরক্ষিত রাখতে সচেতন ছিলেন।
তাই, মৃত্যুর পরও তাঁরা গোপনীয়তা বজায় রাখতে চান।
জিন হ্যাকম্যান হলিউডের একজন কিংবদন্তি অভিনেতা ছিলেন। “দ্য ফ্রেঞ্চ কানেকশন”, “আনফরগিভেন”, “হুজিয়ার্স”-এর মতো সিনেমাগুলোতে অভিনয়ের জন্য তিনি পরিচিত।
অভিনয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি দুটি অস্কার জিতেছেন। এছাড়াও, “দ্য রয়্যাল টেনেনবামস” এবং “গেট শর্টি”-র মতো সিনেমাতেও তাঁর অভিনয় দর্শক মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
হ্যাকম্যানের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ফেই মাল্টিজ, যিনি ২০১৭ সালে মারা যান। তাঁদের তিনটি সন্তান রয়েছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন