আতঙ্কে তুরস্ক! ইমামোগলুর গ্রেপ্তারে ফুঁসছে দেশ, রাস্তায় নেমে এল জনতা!

শিরোনাম: তুরস্কের ইস্তাম্বুলের মেয়র আটকের জেরে বিক্ষোভ, পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত

ইস্তাম্বুলের মেয়র একরাম ইমামোগলুকে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের পর তুরস্কে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে। দুর্নীতির অভিযোগেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

শনিবারও তাকে টানা পাঁচ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর আগে শুক্রবারও চার ঘণ্টা ধরে চলা জিজ্ঞাসাবাদে মেয়রকে বিভিন্ন বিষয়ে জেরা করা হয়।

ইস্তাম্বুলে মেয়রের আটকের প্রতিবাদে ইতোমধ্যে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

বিরোধী দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত ইমামোগলুকে আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুরস্কের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

বিক্ষোভকারীরা সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে এবং অবিলম্বে মেয়রের মুক্তির দাবি জানাচ্ছে।

বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনী বিভিন্ন শহরে অভিযান চালাচ্ছে, যার ফলে আটকের সংখ্যাও বাড়ছে।

শুক্রবার রাতের বেলা বিভিন্ন শহর থেকে প্রায় ৩৪৩ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিরোধী দল এই গ্রেফতারকে আসন্ন ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছে।

তাদের মতে, জনপ্রিয়তা ও জনসমর্থন থেকে দূরে রাখতেই এমনটা করা হচ্ছে।

তবে, সরকার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।

ইমামোগলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)-র সঙ্গে যুক্ত।

পিকেকে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী, যারা তুরস্কের অভ্যন্তরে স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত।

মেয়র অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

শনিবার তাকে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।

সেখানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হতে পারে।

ইমামোগলুর আটকের প্রতিবাদে শুধু ইস্তাম্বুল নয়, রাজধানী আঙ্কারা এবং এজিয়ান উপকূলের শহর ইজমিরেও বিক্ষোভ হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে।

অনেক শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করবে না।

তিনি বিরোধী দলকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন।

এরদোয়ানের মতে, বিরোধী দল অস্থিরতা তৈরি করে তাদের ‘লুণ্ঠন’ রক্ষা করতে চাইছে।

মেয়র ইমামোগলুকে আটকের কয়েক দিন আগে, বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)-র প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করার কথা ছিল।

দলীয় সূত্রে খবর, আগামী রোববার মনোনয়ন প্রক্রিয়া পূর্বনির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠিত হবে।

দলের পক্ষ থেকে নাগরিকদের প্রতি রবিবার একটি প্রতীকী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যা ইমামোগলুর প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হচ্ছে।

ইমামোগলু তার গ্রেপ্তারের প্রতিক্রিয়ায় এটিকে একটি ‘ক্যু’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগকে ব্যবহারের অভিযোগ এনেছেন।

তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, জনগণের সমর্থনে তিনি এই ‘ক্যু’ মোকাবিলা করবেন এবং এর পেছনে জড়িতদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবেন।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *