বিখ্যাত বক্সার জর্জ ফোরম্যান: খেলাধুলার জগৎ থেকে সাফল্যের শিখরে
খেলাধুলার জগৎ আজ যেন আরও একটু মলিন হয়ে গেল। জর্জ ফোরম্যানের প্রয়াণে বক্সিংয়ের সোনালী দিনের স্মৃতি আরও ফিকে হয়ে এল।
ফোরম্যানের জীবন ছিল বর্ণাঢ্য। তিনি যেমন ছিলেন এক শক্তিশালী বক্সার, তেমনি ব্যবসায়িক সাফল্যের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
১৯৭০-এর দশকে ফোরম্যান যখন বিশ্ব হেভিweight চ্যাম্পিয়ন হন, তখন তাঁর শারীরিক শক্তি ছিল ঈর্ষণীয়। তাঁর সেই ভয়ঙ্কর রূপের কারণে প্রতিপক্ষরা সবসময় তাঁকে সমীহ করত।
কিন্তু বক্সিংয়ের বাইরে তিনি ছিলেন একজন হাসিখুশি, আকর্ষণীয় মানুষ। এই দুই ভিন্ন রূপের ফোরম্যানকে উপলব্ধি করা ছিল এক দারুণ অভিজ্ঞতা।
১৯৭৩ সালের জানুয়ারিতে, আমি যখন ১১ বছরের বালক, তখন প্রথম ফোরম্যানের কথা শুনি। এর আগে থেকেই বক্সিং আমার ভালো লাগতো, বিশেষ করে মোহাম্মদ আলীর খেলা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম।
আলী ছিলেন যেমন বুদ্ধিমান, তেমনই ছিলেন সাহসী। তবে ফোরম্যান ছিলেন অন্যরকম। সেই সময় জো ফ্রেজিয়ারকে হারিয়ে ফোরম্যান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন।
পরের বছর, ১৯৭৪ সালে, জাইরে (বর্তমান ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো)-তে ‘রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল’ খ্যাত ঐতিহাসিক ম্যাচে ফোরম্যানের মুখোমুখি হন মোহাম্মদ আলী। সেই লড়াইয়ের আগে সবাই আলী সম্পর্কে চিন্তিত ছিল।
কারণ ফোরম্যানের শারীরিক শক্তি ছিল অনেক বেশি। কিন্তু আলী ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। সেই ম্যাচে আলী ফোরম্যানকে পরাজিত করেন এবং বিশ্বজুড়ে তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বাড়ে।
ফোরম্যান ১৯৮৭ সালে খেলাধুলায় ফিরে আসেন। এরপর তিনি আর আগের মতো ভয়ঙ্কর ছিলেন না। বরং, তাঁর মধ্যে দেখা যায় এক ভিন্ন রূপ।
১৯৯৪ সালে, ৪৫ বছর বয়সে তিনি আবার বিশ্ব হেভিweight চ্যাম্পিয়ন হন। তাঁর এই ফিরে আসা ছিল এক অসাধারণ ঘটনা।
খেলা ছাড়ার পর তিনি জর্জ ফোরম্যান গ্রিল নামের একটি ব্যবসা শুরু করেন এবং ব্যবসায়িক সাফল্যের শিখরে আরোহণ করেন।
ফোরম্যানের জীবন ছিল উত্থান-পতনে ভরা। বক্সিংয়ের কঠিন জগৎ থেকে শুরু করে ব্যবসার সফল ব্যক্তিত্ব হিসেবে তিনি সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। তাঁর এই বিচিত্র জীবনযাত্রা আমাদের অনেক কিছু শিখিয়ে যায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান