কানাডার রাজনীতিতে নতুন মোড়, নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত মার্ক কার্নি।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্প্রতি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মার্ক কার্নি। আর এবার তিনি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুত হচ্ছেন।
অটোয়ার নেপিয়ান নির্বাচনী এলাকা থেকে তিনি লড়বেন বলে জানা গেছে। তার দল লিবারেল পার্টি এই ঘোষণা দিয়েছে।
খুব সম্ভবত ২৮শে এপ্রিল সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা আসতে পারে। লিবারেল পার্টি সূত্রে খবর, অটোয়ার শহরতলির এই নেপিয়ান এলাকা থেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কার্নি।
উল্লেখ্য, এই শহরেই তিনি তার পরিবারকে বড় করেছেন এবং জনসেবার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর আগে তিনি কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান এবং ডেপুটি গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেছেন।
কানাডার হাউস অফ কমন্সের ৩৪৩টি আসনের জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এর প্রচার অভিযান চলবে ৩৭ দিন ধরে।
যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, হয় এককভাবে অথবা অন্য দলের সমর্থনে, তারাই সরকার গঠন করবে এবং তাদের নেতা হবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগ করার পর ৯ই মার্চ লিবারেল পার্টি কার্নিকে তাদের নেতা নির্বাচিত করে। ১৪ই মার্চ তিনি কানাডার ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
কার্নি মনে করেন, সংকটকালে সরকারের একটি শক্তিশালী এবং সুস্পষ্ট ম্যান্ডেট থাকা প্রয়োজন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একসময় ধারণা করা হচ্ছিলো আসন্ন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির পরাজয় হতে পারে। কিন্তু সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ ঘোষণার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়।
বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টি আশা করেছিলো, তারা ট্রুডোর দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে সুবিধা আদায় করবে। কারণ, খাদ্য ও আবাসনের মূল্যবৃদ্ধি এবং অভিবাসন বেড়ে যাওয়ায় ট্রুডোর জনপ্রিয়তা কমে গিয়েছিল।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সম্পর্কের স্থিতিশীলতার পরিবর্তে, এখন সবাই জানতে চাইছে, ট্রাম্পের সঙ্গে ভালোভাবে মোকাবেলা করতে পারবে এমন নেতা কে?
৬০ বছর বয়সী কার্নি ২০০৮ সালের আর্থিক সংকটকালে ব্যাংক অফ কানাডার প্রধান ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি প্রথম ব্রিটিশ নাগরিক না হয়েও ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের প্রধান হন এবং ব্রেক্সিটের প্রভাব মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়ের পয়েলিয়েভ কার্নির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। ট্রাম্পের বিতর্কিত আচরণের কারণে কনজারভেটিভ পার্টি নির্বাচনে বড় ধরনের জয়ের দিকে এগিয়ে যেতে পারছিল।
ট্রাম্প বিভিন্ন সময়ে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্যে পরিণত করার কথা বলেছেন। তিনি কানাডার ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, তিনি কানাডার সকল পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, যা কানাডার জনগণের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে।
ট্রাম্পের এমন আক্রমণ কানাডার সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছে। এর ফলস্বরূপ, কানাডিয়ানদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর মাধ্যমে লিবারেল পার্টির জন সমর্থন বেড়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান