ক্ষমতায় ফিরেই চমক! ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বদলে গেল অনেক কিছু…

ডোনাল্ড ট্রাম্প: ক্ষমতা গ্রহণের পর সমর্থনকারীদের পুরষ্কার, উঠছে বিতর্কের ঝড়

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ফেরার পর থেকেই বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এর মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন, যারা তার নির্বাচনী প্রচারণায় সক্রিয়ভাবে সমর্থন জুগিয়েছিল। তবে, এই দ্রুত সিদ্ধান্তগুলো যেমন কিছু মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি এতে বিতর্কও সৃষ্টি হয়েছে।

ক্রিপ্টোকারেন্সি: বিনিয়োগকারীদের জন্য সুবিধা

২০২৪ সালের শুরুর দিকে, বিটকয়েন বিনিয়োগকারী ডেভিড বেইলি আশা করেছিলেন, ট্রাম্প ক্রিপ্টোকারেন্সিকে সমর্থন করে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে পারেন।

ট্রাম্প নিজেও পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রকে বিটকয়েনের আশ্রয়স্থল হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দেন। এর ফলস্বরূপ, তিনি ফেডারেল রিজার্ভকে সোনা এবং বিটকয়েন উভয়ই সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। ক্রিপ্টোকারেন্সি সমর্থনকারীরা দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছিলেন।

বেইলি মনে করেন, এক বছর আগেও এমনটা কল্পনাতীত ছিল।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত

ট্রাম্প শুধু ক্রিপ্টোকারেন্সির দিকেই মনোযোগ দেননি, বরং আদিবাসী লুম্বি উপজাতি এবং শ্রমিক ইউনিয়নকেও কাছে টেনেছেন।

উত্তর ক্যারোলিনার লুম্বি উপজাতি ঐতিহ্যগতভাবে ডেমোক্রেটদের সমর্থন করত। কিন্তু ট্রাম্প তাদের ফেডারেল স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, যা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এর ফলস্বরূপ, লুম্বি অধ্যুষিত রোবসন কাউন্টিতে ট্রাম্প ২৮ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। ক্ষমতা গ্রহণের তিন দিনের মধ্যে ট্রাম্প লুম্বি উপজাতিকে পূর্ণ ফেডারেল স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা করেন।

শ্রমিক ইউনিয়নের সমর্থন: অপ্রত্যাশিত জোট

ট্রাম্পের এই কৌশল শুধু একটি গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেন, যা সাধারণত ডেমোক্রেটদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।

টিমস্টার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট শন ও’ব্রায়েন রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন, যা অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল। পরবর্তীতে, ইউনিয়নটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করেনি।

এর ফলস্বরূপ, ট্রাম্প শ্রমিক পরিবারগুলোর মধ্যে ৪৫ শতাংশ ভোট পান, যা রিপাবলিকানদের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।

বিতর্ক ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

তবে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপগুলো বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সমালোচকদের মতে, তিনি বিভিন্ন গোষ্ঠীর সমর্থন আদায়ের জন্য দ্রুত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।

ট্রাম্পের পরিবারের ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসা নিয়েও অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এটি স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই কৌশল আগামী মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জন্য কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। কারণ, কিছু গোষ্ঠীর সমর্থন ধরে রাখা কঠিন হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, লিবার্টারিয়ান ভোটার এবং প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের সমর্থকদের রিপাবলিকানদের প্রতি আকৃষ্ট করা কঠিন হতে পারে।

ভবিষ্যতে ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তার সমর্থক গোষ্ঠীগুলোর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে কিনা, সেটিই এখন দেখার বিষয়। লুম্বি উপজাতি এখনো ফেডারেল সুবিধা পাওয়ার জন্য কংগ্রেসের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *