মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসী শ্রমিকদের তথ্য সংগ্রহ করতে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা (আইআরএস)-এর সাথে একটি চুক্তি করার পথে রয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানা গেছে।
‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এর সূত্রে খবর, এই চুক্তির ফলে অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা কর সংক্রান্ত তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন।
যদি এই চুক্তি কার্যকর হয়, তবে তা হবে নজিরবিহীন। এর মাধ্যমে মূলত, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের বিতাড়ন প্রক্রিয়াকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণত, অভিবাসন সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের কর বিষয়ক তথ্যের ওপর নির্ভর করতে দেখা যায় না।
জানা গেছে, প্রস্তাবিত চুক্তি অনুযায়ী, আইসিই, আইআরএস-এর কাছে থাকা অভিবাসীদের নাম ও ঠিকানা জানতে পারবে। এর ফলে অভিবাসীদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সাধারণত, এই ধরনের সংবেদনশীল তথ্য অত্যন্ত গোপন রাখা হয়। কারণ, এটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, কাগজপত্রবিহীন অভিবাসীরাও কর দিতে বাধ্য। তাদের ক্ষেত্রে, সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর (Social Security Number) না থাকার কারণে, তারা ‘ব্যক্তিগত কর শনাক্তকরণ নম্বর’ বা ‘আইটিআইএন’ (ITIN) ব্যবহার করে থাকেন। এই কর্মীদের কাছ থেকে কর আদায়ের পর সরকার তাদের নাগরিকের মতোই সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে।
আইআরএস-এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, করদাতাদের তথ্য সুরক্ষিত রাখা তাদের প্রধান দায়িত্ব। তবে, কিছু ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশে, তদন্তের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে তথ্য শেয়ার করা যেতে পারে। তবে, সূত্রের খবর অনুযায়ী, অভিবাসন সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সাধারণত এমন ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা বিরল।
ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন নীতি কঠোর করার দিকে ঝুঁকছে। তার অংশ হিসেবে, এই পদক্ষেপকে দেখা হচ্ছে। নির্বাচনী প্রচারের সময় ট্রাম্প অবৈধভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের বিতাড়নের ঘোষণা করেছিলেন। ক্ষমতায় আসার পর, তিনি অভিবাসীদের জন্য বিভিন্ন আইনি পথও বন্ধ করে দিয়েছেন।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (Department of Homeland Security – DHS) সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, তারা প্রায় ৫ লাখ ৩০ হাজার কিউবান, হাইতিয়ান, নিকারাগুয়ান এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকের সাময়িক আইনি স্বীকৃতি বাতিল করতে পারে। এছাড়াও, শিকাগো এবং নিউইয়র্কের মতো বড় শহরগুলোতে, যেখানে অভিবাসীর সংখ্যা বেশি, সেখানে আইসিই প্রায়ই অভিযান চালায়।
গত সপ্তাহে, ট্রাম্প প্রশাসন আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ১৩৭ জন ভেনেজুয়েলার অভিবাসীকে তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান