এল সালভাদরের বিতর্কিত কারাগারে বন্দী ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের মুক্তির দাবিতে সরব পরিবারগুলো। দেশটির কুখ্যাত ‘সেকোট’ কারাগারে বন্দীদের বিষয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ দিয়েছে সরকার। তবে মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, বন্দীদের প্রতি কর্তৃপক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হয়ে আসা ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের মুক্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। মানবাধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক কমিশনের প্রধান আন্দ্রেস গুজম্যান জানিয়েছেন, যাদের স্বজন ‘অন্যায়ভাবে’ কারাগারে বন্দী রয়েছেন, তারা তাদের অভিযোগ জমা দিতে পারবেন।
জানা গেছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ২৩৮ জন ভেনেজুয়েলার নাগরিককে এল সালভাদরে ফেরত পাঠানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকে ভেনেজুয়েলার ত্রেন দে আরাগুয়া গ্যাং-এর সঙ্গে জড়িত। এরপর তাদের সেকোট কারাগারে পাঠানো হয়, যা আমেরিকার বৃহত্তম কারাগার হিসেবে পরিচিত।
ভেনেজুয়েলার সরকার ও পরিবারগুলো এল সালভাদরের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে তাদের স্বজনদের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, এল সালভাদর কিংবা যুক্তরাষ্ট্র কেউই তাদের বিরুদ্ধে গ্যাং সদস্যের প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলেকে বন্দীদের ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে, এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট বুকেলে অবশ্য বন্দীদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অন্য দেশের বন্দীদের সঙ্গে স্থানীয় বন্দীদের মতো একই আচরণ করা হচ্ছে। তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো কারাগারে বন্দীদের প্রতি অমানবিক আচরণের অভিযোগ এনেছে। এমনকি, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরও দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা নির্যাতন ও নিষ্ঠুর আচরণের অভিযোগ করেছে।
সেকোট কারাগারটি প্রায় ৪০ হাজার বন্দী ধারণ করতে পারে। বর্তমানে সেখানে ১০ থেকে ২০ হাজারের মতো বন্দী রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এল সালভাদরের একটি চুক্তির মাধ্যমে এই বন্দী স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, বন্দীদের দেখাশোনার জন্য এল সালভাদরকে ৬ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে, মানবাধিকার কর্মীদের মতে, এই ধরনের চুক্তি মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণ হতে পারে।
ভেনেজুয়েলার সরকার তাদের নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনের জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। দেশটির বিশেষ দূত জর্জ রদ্রিগেজ গোমেজ সম্প্রতি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে আটক ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এদিকে, ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের মুক্তির দাবিতে কারাকাসে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা তাদের স্বজনদের মুক্তি এবং তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন