হিটরউ বিমানবন্দরের বিদ্যুৎ বিভ্রাট: তদন্ত শুরু, বাংলাদেশি যাত্রীদের উপর প্রভাবের শঙ্কা
গত শুক্রবারে লন্ডনের হিথরউ বিমানবন্দরে একটি বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এর ফলে বিমানবন্দরের কার্যক্রম কিছু সময়ের জন্য ব্যাহত হয়, যা আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী হাজার হাজার যাত্রীর জন্য চরম দুর্ভোগ ডেকে আনে।
এই ঘটনার জেরে এয়ারলাইনসগুলোর প্রায় ৬০ থেকে ৭০ মিলিয়ন পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় আনুমানিক ৮০০ থেকে ৯৪০ কোটি টাকা) ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এতে দুই লক্ষাধিক যাত্রীর ভ্রমণও বিঘ্নিত হয়।
জাতীয় গ্রিডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জন পেটিগ্রু জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের পরেও হিথরউ বিমানবন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল। কারণ বিমানবন্দরের বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রস্তুত থাকা অন্যান্য কেন্দ্রগুলো পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে সক্ষম ছিল।
তিনি আরও জানান, হিথরউ বিমানবন্দরের চাহিদা মেটানোর মতো যথেষ্ট ক্ষমতা অন্য কেন্দ্রগুলোর ছিল।
তবে বিমানবন্দরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যুতের অভাবে ব্যাগেজ সিস্টেম, জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা এবং বিমানবন্দরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো বন্ধ হয়ে যায়। বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থমাস ওল্ডব্যের মতে, জরুরি অবস্থার জন্য তাদের কাছে পর্যাপ্ত ব্যাকআপ ব্যবস্থা ছিল না।
যদিও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সচল ছিল, কিন্তু অন্যান্য অনেক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লেগেছে।
ব্রিটিশ সরকার এরই মধ্যে বিমানবন্দরের এই অচলাবস্থা নিয়ে একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। জ্বালানি বিষয়ক মন্ত্রী এড মিলিব্যান্ড বলেছেন, সরকার এই ঘটনার কারণ জানতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, আগুনে প্রায় ২৫ হাজার লিটার কুলিং অয়েল পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পুরনো প্রযুক্তির কারণে একটি অগ্নিকাণ্ডের ফলে বিমানবন্দরের তিনটি ট্রান্সফরমারের সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তারা এখনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে পারেননি, কারণ সেখানকার তাপমাত্রা এখনো অনেক বেশি।
হিথরউ বিমানবন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ট্রানজিট হাব, বিশেষ করে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে এই বিমানবন্দরের উপর অনেক যাত্রী নির্ভরশীল। এই ঘটনার কারণে অনেক বাংলাদেশি যাত্রীকেও বিমানে উঠা বা ফ্লাইট পরিবর্তনে জটিলতার শিকার হতে হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় অনেক ফ্লাইট বাতিল বা বিলম্বিত হয়েছে, যার ফলে যাত্রীদের মধ্যে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এমতাবস্থায়, হিথরউ হয়ে চলাচলকারী বাংলাদেশি যাত্রীদের তাদের ফ্লাইট এবং বিমানবন্দরের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান