লখ নেসের ভয়ঙ্কর সব নেসি: কার্টুন থেকে হার্জগ, কেমন ছিলো?

লোচ নেস-এর জলদানব: স্কটল্যান্ডের কিংবদন্তী আর রুপকথার জগৎ বহু বছর ধরে, স্কটল্যান্ডের লোচ নেস-এর জলরাশিতে লুকিয়ে থাকা এক রহস্যময় প্রাণী ‘নেসি’-র গল্প বিশ্বজুড়ে মানুষের মনে কৌতূহল জাগিয়ে রেখেছে।

নেসি শুধু একটি কিংবদন্তী নয়, এটি স্কটিশ সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। পর্যটকদের কাছে এটি একটি আকর্ষণ, লেখকদের জন্য কল্পনার খোরাক, আর চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য ব্যবসার উজ্জ্বল সম্ভাবনা।

১৯৩৩ সালের মে মাসে, ডোনাল্ডিনা ও জন ম্যাককে নামের এক দম্পতি প্রথম ‘নেসি’-কে দেখেন বলে দাবি করেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, তাঁরা জলের উপরিভাগে বিশাল আকারের একটি প্রাণী দেখেছেন, যা দেখতে অনেকটা তিমি মাছের মতো।

তাঁদের এই দাবির পরেই যেন গল্পের শুরু। সেই ঘটনার পর থেকে, নেসিকে নিয়ে অসংখ্য গল্প, সিনেমা, এবং টিভি শো তৈরি হয়েছে।

সিম্পসন পরিবারও পিছিয়ে নেই, তারা ‘মন্টি ক্যান’ট বাই মি লাভ’ নামক একটি পর্বে নেসির সঙ্গে মি. বার্নসের লড়াই দেখিয়েছে। কবি টেড হিউজ ‘নেসি দ্য ম্যানারলেস মনস্টার’ নামে একটি কবিতা লিখেছেন, যেখানে নেসিকে নিয়ে তাঁর ভাবনা প্রকাশ করেছেন।

এছাড়াও, সঙ্গীতশিল্পী মাটিlda ম্যান ‘দ্য লোচ নেস মনস্টার’ নামে একটি গান গেয়েছেন, যা আজও জনপ্রিয়। সম্প্রতি, রয়্যাল মেল নেসিকে সম্মান জানিয়ে একটি স্ট্যাম্প প্রকাশ করেছে।

শুধু গল্প বা সিনেমাই নয়, নেসিকে নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন একটি মিউজিক্যালও। গ্লাসগোর শোনঘ মারে নামের একজন শিল্পী এই মিউজিক্যালটির রচনা ও সুর করেছেন।

তিনি জানান, প্রথমে তিনি এই কাজটি করতে দ্বিধা বোধ করছিলেন, কিন্তু তাঁর বাবার অনুপ্রেরণায় তিনি রাজি হন। শোনঘ মারের মতে, নেসির গল্পে এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা মানুষকে আকর্ষণ করে।

এই মিউজিক্যালটি বর্তমানে এডিনবার্গ ও পিটলোকরিতে প্রদর্শিত হচ্ছে।

নেসিকে নিয়ে তৈরি হওয়া সিনেমাগুলোর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হল ১৯৩৪ সালের ‘দ্য সিক্রেট অফ দ্য লোচ’। যদিও এই সিনেমার কাহিনী দুর্বল ছিল, তবুও এটি নেসির গল্পকে সিনেমায় তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা ছিল।

পরবর্তীতে ‘বেনিথ লোচ নেস’, ‘লোচ নেস’ এবং ওয়ার্নার হার্জগের তৈরি করা ‘ইনসিডেন্ট অ্যাট লোচ নেস’-এর মতো সিনেমাগুলোও দর্শকদের মন জয় করেছে।

নেসির রহস্য ভেদ করার জন্য বহু বিজ্ঞানী ও গবেষক চেষ্টা করেছেন। কেউ কেউ মনে করেন, এটি আসলে একটি জলজ প্রাণী, যা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।

আবার কারো মতে, এটি নিছক গুজব। এই রহস্যের সমাধান আজও মেলেনি, তবে এটিই সম্ভবত নেসির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।

নেসির গল্প শুধু স্কটল্যান্ডের নয়, সারা বিশ্বের মানুষের কাছেই কৌতূহলের বিষয়। রহস্য আর কল্পনার মিশেলে তৈরি হওয়া এই জলদানব যুগে যুগে মানুষের মনে গেঁথে থাকবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *