মার্কিন স্বীকৃতির স্বপ্নে বিভোর পুতিন! বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস

ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘সাফল্যে’ যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি চান পুতিন: বিশ্লেষকের বিশ্লেষণ।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এর ফলস্বরূপ অর্জিত অঞ্চলগুলোর বৈধতা আদায়ের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাদের মতে, এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

সোভিয়েত আমল থেকে চলে আসা বৃহৎ শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার আকাঙ্ক্ষা থেকেই এই ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি।

বিশেষজ্ঞদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পুতিনের এই পদক্ষেপ নতুন কিছু নয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতারাও অতীতে বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেতে চেষ্টা করেছেন।

তারা সবসময় চেয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন তাদের অর্জিত ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেয়। এর বিনিময়ে অনেক সময় তারা ছাড় দিতেও রাজি ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্তালিনের নীতিতেও এমনটা দেখা গেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুতিনের বর্তমান পররাষ্ট্রনীতির মূল লক্ষ্য হলো, ইউক্রেনে রাশিয়ার অর্জনকে যুক্তরাষ্ট্র যেন বৈধতা দেয়। তিনি ইউক্রেন এবং ইউরোপের মানুষের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

তাদের মতে, পুতিনের এই ধরনের চিন্তা, অনেকটা উনিশ শতকের বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রভাব বিস্তারের ধারণার সঙ্গে মিলে যায়।

এই প্রসঙ্গে তারা আরও উল্লেখ করেন, রাশিয়া তার প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। ইউক্রেন যদি রাশিয়ার এই প্রভাব বিস্তারের পথে বাধা হয়, তাহলে রাশিয়া তাকে শাস্তি দিতেও প্রস্তুত।

পুতিনের এই নীতির সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু চিন্তাভাবনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ট্রাম্পও বিভিন্ন সময়ে আমেরিকার প্রভাব বিস্তারের কথা বলেছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের একটি বৃহৎ শক্তি হিসেবে প্রমাণ করতে চাইছে। এর কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন, রাশিয়া সবসময়ই তার দুর্বল প্রতিবেশীদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে চেয়েছে।

অনেকের মতে, এর মাধ্যমে রাশিয়া প্রমাণ করতে চায় যে, তারা কতটা শক্তিশালী। সোভিয়েত আমলে যদিও জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়নি, তবে বর্তমান রাশিয়া সেই তুলনায় স্থিতিশীল।

তাই, নিজেদের বৃহৎ শক্তি হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি তারা অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোও কিছুটা হলেও সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া যদি সত্যিই একটি বৃহৎ শক্তি হতে চায়, তাহলে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সমাধানে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। তবে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের প্রভাব ধরে রাখতে তারা এই মুহূর্তে সম্ভবত অন্য কিছুকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *