উষ্ণতা বৃদ্ধি: আমেরিকার গ্রীষ্মে তাপপ্রবাহ এবং আমাদের জন্য সতর্কবার্তা
বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে গ্রীষ্মকালে তাপপ্রবাহ একটি মারাত্মক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নত দেশগুলোও এর থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে, যা জনস্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া দপ্তর এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (CDC) যৌথভাবে এই গ্রীষ্মের জন্য তাপ-সম্পর্কিত ঝুঁকির পূর্বাভাস দিয়েছে। এই পূর্বাভাসে তাপমাত্রার তীব্রতা, অস্বাভাবিকতা এবং সম্ভাব্য সময়কালের উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
অতীতের ডেটা বিশ্লেষণ করে তারা নির্দিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের উপর এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলিও বিবেচনা করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (National Weather Service) এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ২১শে জুন থেকে ২২শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে গড়ে ৬০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ তাপ সম্পর্কিত সতর্কতা, সতর্কতা এবং ঘোষণার আওতায় ছিলেন।
গরমের কারণে জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং হিট স্ট্রোকের মতো ঘটনাগুলোও বাড়ছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ এখন আরও বেশি সাধারণ, তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে। রাতের বেলা তাপমাত্রা যথেষ্ট পরিমাণে না কমার কারণে মানুষ স্বস্তি পাচ্ছে না।
তাপমাত্রার এই ঊর্ধ্বগতি নতুন রেকর্ড তৈরি করছে। আবহাওয়া দপ্তর প্রতিদিন বিভিন্ন অঞ্চলের সম্ভাব্য রেকর্ড ভাঙা তাপমাত্রা সম্পর্কে পূর্বাভাস দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে অনেক স্থানেই তাপমাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এর পাশাপাশি, বিভিন্ন অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা কেমন থাকতে পারে, সে পূর্বাভাসও দেওয়া হচ্ছে। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন স্থানগুলো চিহ্নিত করা হচ্ছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাই।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের অনেক দেশেই আবহাওয়ার চরম রূপ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।
আমাদের দেশেও গরমের তীব্রতা বাড়ছে, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। ভবিষ্যতে এর প্রভাব আরও বাড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহের কারণে মানুষের স্বাস্থ্যহানি, বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে।
এছাড়া, কৃষিকাজ, বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার উপরও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
সুতরাং, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
আমাদের সবাইকে পরিবেশ সুরক্ষায় আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে এবং ব্যক্তিগত পর্যায়েও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন