পশ্চিমবঙ্গের প্রাকৃতিক পরিবেশে অশ্বারোহণের মাধ্যমে মানসিক শান্তির এক নতুন দিগন্ত।
বর্তমান যুগে মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি মানুষের সচেতনতা বাড়ছে, মানুষ এখন প্রকৃতির কাছাকাছি সময় কাটাতে এবং মানসিক শান্তির জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজছে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটানো, পশুদের সাথে সময় কাটানো, মানুষের মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে।
সম্প্রতি, ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট সাসেক্সে অবস্থিত একটি বিশেষ ফার্ম, ওয়েস্টারল্যান্ডস, এই ধারণা নিয়ে কাজ করছে। এখানে অশ্বারোহণের মাধ্যমে মানুষের মানসিক শান্তির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ওয়েস্টারল্যান্ডস-এর মূল আকর্ষণ হলো “ইকুইস্ট্রিয়ান ওয়েলনেস” বা অশ্বারোহণের মাধ্যমে সুস্থ জীবন যাপন বিষয়ক কর্মশালা। এই কর্মশালায় প্রশিক্ষকরা ঘোড়ার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রকৃতির কাছাকাছি আসার উপর জোর দেন।
কর্মশালার অংশ হিসেবে শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যায়াম, ধ্যান এবং ডায়েরি লেখার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এছাড়াও, ঘোড়ার সাথে কিভাবে সংযোগ স্থাপন করতে হয়, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এখানে আগতরা ঘোড়ার শরীর স্পর্শ করে, তাদের ঘ্রাণ নেয় এবং তাদের সাথে সময় কাটায়। এটি মনকে শান্ত করে এবং জীবনের প্রতি নতুন উপলব্ধি তৈরি করতে সাহায্য করে।
ওয়েস্টারল্যান্ডস-এর কর্মশালাগুলোতে, অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা অংশগ্রহণকারীদের ঘোড়ার আচরণ এবং তাদের মানসিকতা বুঝতে সাহায্য করেন। ঘোড়ার শান্ত ও স্থিতিশীল স্বভাব মানুষের মানসিক শান্তির জন্য খুবই উপকারী।
কর্মশালায় ঘোড়ার যত্ন, তাদের খাদ্য এবং তাদের সুস্থ জীবনযাপনের পদ্ধতি সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়। এই ফার্মের কর্মীরা জানান, ঘোড়ারা নিজেরাই তাদের প্রয়োজনীয় ভেষজ উপাদান খুঁজে নিতে পারে।
যেমন, লেবু পাতা তাদের অ্যান্টিহিস্টামিন হিসেবে এবং রোজহিপ তাদের শরীরের সংযোগস্থলের জন্য উপকারী।
ওয়েস্টারল্যান্ডস-এ থাকার জন্য আরামদায়ক কুটির, কটেজ এবং ঐতিহ্যবাহী খামারবাড়ি রয়েছে। এছাড়াও, এখানে একটি বিশেষ ক্যাম্পিং সাইটও আছে, যেখানে অতিথিরা প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে পারেন।
এখানকার পরিবেশ প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার এক চমৎকার অনুভূতি দেয়। এখানে আগতরা প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের আউটডোর কার্যক্রমে অংশ নিতে পারে।
ওয়েস্টারল্যান্ডস-এর মালিকরা প্রকৃতির সংরক্ষণ এবং জীববৈচিত্র্য বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন। তারা জানান, প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার ফলে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। এই ফার্মটি শুধুমাত্র একটি থাকার জায়গা নয়, এটি প্রকৃতির সাথে মানুষের গভীর সংযোগ স্থাপনের একটি স্থান।
বর্তমানে, মানসিক স্বাস্থ্য এবং প্রকৃতির সান্নিধ্যের গুরুত্ব বাড়ছে। ওয়েস্টারল্যান্ডস-এর এই উদ্যোগ, আমাদের প্রকৃতির কাছাকাছি থাকতে এবং মানসিক শান্তির অন্বেষণে উৎসাহিত করে। এই ধরনের অভিজ্ঞতা আমাদের জীবনের চাপ কমাতে এবং প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: The Guardian