শিরোনাম: ফুটবলে সাফল্যের চাবিকাঠি: খেলোয়াড়দের ঘুমের গুরুত্ব
ফুটবল, যা বর্তমানে সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে অন্যতম, বাংলাদেশেও অত্যন্ত পরিচিত ও পছন্দের একটি বিষয়।
দেশের তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তি পর্যন্ত, সবাই এই খেলার প্রতি আলাদা আকর্ষণ অনুভব করে।
খেলোয়াড়দের শারীরিক সক্ষমতা, কৌশল এবং মানসিক দৃঢ়তা – এই তিনটি বিষয় একটি দলের সাফল্যের জন্য জরুরি।
তবে, আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, খেলোয়াড়দের ভালো ঘুমের অভ্যাস তাদের খেলার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
খেলাধুলায় সেরা পারফরম্যান্সের জন্য, ফুটবল ক্লাবগুলো খেলোয়াড়দের খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক গঠন এবং অন্যান্য সূক্ষ্ম বিষয়গুলো নিয়মিত বিশ্লেষণ করে থাকে।
তাদের প্রধান লক্ষ্য হলো, খেলোয়াড়রা যেন সঠিক সময়ে তাদের সেরাটা দিতে পারে।
সম্প্রতি, এই গবেষণায় ঘুমের গুরুত্বের বিষয়টি বিশেষভাবে উঠে আসছে।
কারণ, পর্যাপ্ত ঘুম খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
ঘুমের অভাব খেলোয়াড়দের ইনজুরির ঝুঁকি বাড়ায় এবং মাঠের পারফরম্যান্সকে দুর্বল করে তোলে।
ঘুম কম হলে খেলোয়াড়দের মনোযোগ কমে যায়, যা খেলার গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোতে ভুল করার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
এই কারণে অনেক খেলোয়াড় ঘুমের ওষুধ বা তামাকজাত দ্রব্য, যেমন – ‘স্নুস’-এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন।
খেলা শেষে রাতের বেলা দেরিতে ঘুমানো, খেলার চাপ, বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ, এবং জনসাধারণের কড়া নজরদারির মতো বিষয়গুলো খেলোয়াড়দের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
চিকিৎসকদের মতে, ঘুমের ওষুধ তাৎক্ষণিক ঘুমের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি ভালো সমাধান নয়।
ঘুমের ওষুধের প্রতি আসক্তি তৈরি হতে পারে, যা খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে।
এছাড়া, ‘স্নুস’-এর মতো নিকোটিনযুক্ত পণ্যও খেলোয়াড়দের ঘুমকে ব্যাহত করে।
এই সমস্যাগুলো সমাধানে ক্লাবগুলো এখন ঘুম বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করছে এবং খেলোয়াড়দের ঘুমের বিষয়ে সচেতন করছে।
উন্নত ঘুমের জন্য খেলোয়াড়দের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
উদাহরণস্বরূপ, কিছু ক্লাবে ঘুমের সময়সূচী তৈরি করা হচ্ছে, ঘুমের আগে স্ক্রিন টাইম কমানো হচ্ছে এবং খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার জন্য কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন তাদের মধ্যে ৬৯ শতাংশ মানুষ কোনো সাহায্য চান না।
এর কারণ হতে পারে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসা সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা বা ভীতি।
তবে, ঘুমের সমস্যাকে অবহেলা করলে তা খেলোয়াড়দের কর্মক্ষমতা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
খেলাধুলার জগতে ঘুমের গুরুত্ব বাড়ছে।
বাস্কেটবল খেলোয়াড় লেব্রন জেমস এবং কোবি ব্রায়ান্টের মতো তারকারা পর্যাপ্ত ঘুমের ওপর জোর দিয়েছেন।
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বেশি ঘুমিয়েছেন, তাদের খেলার দক্ষতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
তাই, ফুটবল ক্লাব ও খেলোয়াড়দের ভালো ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলার দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
কারণ, পর্যাপ্ত ঘুম খেলোয়াড়দের সাফল্যের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তথ্য সূত্র: