ফেরার অপেক্ষায় নায়ক! বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে ক্লপই কি আসল?

বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সোনালী দিন: ক্লপ যুগের জয়যাত্রা।

জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। আগামী ২৩শে আগস্ট, বায়ার লেভারকুসেনের বিরুদ্ধে মাঠে নামার পরেই দলটির ম্যানেজার ইয়ুর্গেন ক্লপ নিজের নামের পাশে লিখিয়ে ফেলবেন এক অনন্য রেকর্ড।

তিনি হয়ে উঠবেন ক্লাবটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে দায়িত্বে থাকা কোচ। এই কৃতিত্ব এর আগে ছিল ওটমার হিটজফেল্ডের দখলে, যিনি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ডর্টমুন্ডের দায়িত্বে ছিলেন।

২০-০৯ মৌসুমে ক্লপ যখন ডর্টমুন্ডের দায়িত্ব নেন, তখন ক্লাবটি ছিল গভীর আর্থিক সংকটে। মাঠের পারফরম্যান্সেও ছিল চরম অস্থিরতা।

কিন্তু ক্লপের হাত ধরে বদলে যায় সব চিত্র। এক দশকেরও কম সময়ে ক্লাবটি অর্জন করে অভাবনীয় সাফল্য। ক্লপের অধীনে ২০১১ সালে লীগ শিরোপা, ২০১২ সালে ‘ডাবল’ জয়, এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে একাধিকবার ভালো ফল করে ডর্টমুন্ড।

বর্তমানে ক্লাবটি প্রায় দেনা মুক্ত এবং তাদের বার্ষিক আয় ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি। মাঠের খেলায় আক্রমণাত্মক মানসিকতার কারণে জার্মানীর গন্ডি পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে ক্লাবটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।

ম্যাটস হামেলস, রোমান উইডেনফেলার, কেভিন গ্রোসক্রয়েজ, এরিক ডার্ম এবং ম্যাথিয়াস গিন্টারের মত খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দলটি এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নও।

বিশ্বকাপ জয়ের পর খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করা কঠিন হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ক্লপ মজা করে বলেছিলেন, “আমার বরং এখন এটাই সমস্যা যে, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা আমার প্রথমবার হচ্ছে।”

গত মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে ক্লপের মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা দেখা গিয়েছিল। তবে প্রাক-মৌসুমে তাকে বেশ শান্ত দেখা যাচ্ছে।

বায়ার্ন মিউনিখের আধিপত্যের কারণে ডর্টমুন্ড প্রত্যাশিত সাফল্যের কাছাকাছি পৌঁছতে পারছিল না, এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল। তবে ক্লপ ও বোর্ডের সদস্যরা মনে করেন, অল্প সময়ে দল যে উন্নতি করেছে, সেটাই তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

আসন্ন মৌসুমে ডর্টমুন্ডের লক্ষ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ক্লাবটির ক্রীড়া পরিচালক মাইকেল জর্ক বলেন, “আমরা লীগের শীর্ষ স্থান ধরে রাখতে চাই এবং সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে চাই।

এছাড়াও, জার্মান কাপের ফাইনালে আবারও খেলতে চাই এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে যেতে চাই।”

এদিকে, ক্লপ এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের প্রিমিয়ার লীগে যাওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। বিশেষ করে ম্যাটস হামেলস, মার্কো রিউস এবং ইলকাই গুন্দোগানের দল ছাড়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে।

ক্লপ অবশ্য মজা করে বলেছেন, হামেলস যদি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যোগ দেন, তাহলে তিনি “একটি ঝাঁটা খাবেন”।

রিউসের দল ছাড়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। তবে ক্লাব কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাকে এখনই বিক্রি করা হচ্ছে না।

২০১১ সাল থেকে ডর্টমুন্ডের নীতি হলো প্রতি মৌসুমে দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে বিক্রি করা। আক্রমণভাগের খেলোয়াড় রবার্ট লেভান্ডোভস্কিকে বায়ার্নে বিক্রি করার পর সেই শূন্যতা পূরণের জন্য ক্লাবটি সিরো ইমমোবিলে এবং অ্যাড্রিয়ান রামোসকে দলে ভিড়িয়েছে।

ক্লপ সম্ভবত পুরনো ৪-৪-২ ফর্মেশনে ফিরতে পারেন। তবে তার মূল চিন্তা হলো দলের রক্ষণভাগকে আরও শক্তিশালী করা।

গত মৌসুমে দলটি ৩৮টি গোল হজম করেছে। ক্লপ জানিয়েছেন, আগামী মৌসুমে তারা যেন কম গোল হজম করে সেদিকে নজর দেবেন।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *