হাঁসের গান: বরফের রাজ্যে এক বিরল কবিতা!

জোওভানি পাওসকোলির কবিতা: “দি স্টপওভার” – প্রকৃতির গান ও এক অনুবাদ।

ইতালীয় কবি জোওভানি পাওসকোলির একটি বিখ্যাত কবিতা হলো “দি স্টপওভার” (Il Transito)। এই কবিতাটি প্রকৃতি, বিশেষ করে উত্তর মেরুর সৌন্দর্য ও একটি রাজহাঁসের গান নিয়ে রচিত। সম্প্রতি, তাইজে সিলভারম্যান এবং মারিনা ডেলা পুত্তা জনস্টন এই কবিতাটির ইংরেজি অনুবাদ করেছেন, যা বাংলা পাঠকদের কাছে কবিতাটির গভীরতা আরও স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

“দি স্টপওভার” কবিতাটি একটি রাজহাঁসের গান দিয়ে শুরু হয়। বরফের বিশাল প্রান্তরে, রাজহাঁস তার তীক্ষ্ণ শব্দ তোলে, যা যেন এক অপূর্ব সঙ্গীতের সৃষ্টি করে। এরপর ধীরে ধীরে দিগন্তে আকাশের রং পরিবর্তন হতে থাকে, যা সবুজ আভার জন্ম দেয়।

কবির ভাষায়, এই দৃশ্য যেন “আলোর এক আচ্ছাদন”। কবিতার মূল অংশে, আর্কটিক অঞ্চলের বিশাল বরফের পাহাড় এবং আকাশের আলো-আঁধারির খেলা ফুটে ওঠে, যা পাঠকদের মনে এক ভিন্ন জগৎ তৈরি করে। এখানে রাজহাঁস শুধু একটি পাখি নয়, বরং প্রকৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা বিশালতা ও সৌন্দর্যের প্রতীক।

পাওসকোলি ১৯ শতকের শেষের দিকে ইতালিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার জীবন ছিল শোক ও প্রকৃতির কাছাকাছি। শৈশবে পিতার মৃত্যুসহ বিভিন্ন দুঃখজনক ঘটনার সাক্ষী তিনি। সম্ভবত, এ কারণেই তার কবিতায় প্রকৃতির গভীরতা এবং জীবনের প্রতিচ্ছবি এত স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। “দি স্টপওভার” কবিতায়ও আমরা সেই গভীরতা অনুভব করি।

কবিতাটি লেখার প্রেক্ষাপটও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ইতালির ঔপনিবেশিক শাসনের সময়, ইথিওপিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে আহত সৈনিকদের সাহায্য করার জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এই কবিতাটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। এই বিষয়টি কবিতার গভীরতাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়।

যদিও কবিতার প্রধান বিষয় প্রকৃতি, কিন্তু এর মধ্যে যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞ এবং মানুষের দুঃখও যেন মিশে আছে।

অনুবাদকদের কৃতিত্ব হলো, তারা মূল কবিতার ভাব অক্ষুণ্ণ রেখে ইংরেজি ভাষায় এর সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলেছেন। তারা ইতালীয় কবিতার ছন্দকে অনুসরণ না করে, নিজস্ব ধারায় কবিতাটিকে উপস্থাপন করেছেন। ফলে, ইংরেজি পাঠকরাও মূল কবিতার মতোই এর গভীরতা অনুভব করতে পারেন।

“দি স্টপওভার” কবিতাটি শুধু প্রকৃতির বর্ণনা নয়, এটি জীবনের উত্থান-পতন, সৌন্দর্য ও বেদনার এক অসাধারণ চিত্র। জোওভানি পাওসকোলির এই কবিতাটি বাংলা পাঠকদের জন্য প্রকৃতির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে, যা তাদের মনকে আলোড়িত করবে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *