বদলে যাচ্ছে! বিদায় লাইভ, ব্লু পিটারের স্মৃতি!

দীর্ঘ ৬৭ বছর ধরে সরাসরি সম্প্রচার হওয়া ব্রিটিশ শিশুতোষ অনুষ্ঠান ‘ব্লু পিটার’ (Blue Peter) তাদের লাইভ সম্প্রচার বন্ধ করতে যাচ্ছে।

বিবিসির (BBC) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দর্শকদের রুচি পরিবর্তনের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে অনুষ্ঠানটি ধারণকৃতভাবে সম্প্রচারিত হবে।

ব্লু পিটার, যুক্তরাজ্যের শিশুদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অনুষ্ঠান।

১৯৬৯ সাল থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত হওয়া এই অনুষ্ঠানটি শিশুদের শিক্ষামূলক বিভিন্ন বিষয়, যেমন – হস্তশিল্প, বিজ্ঞান এবং ভ্রমণের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরত। এটি শুধু একটি টেলিভিশন প্রোগ্রাম ছিল না, বরং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এটি ছিল শিশুদের শৈশব এবং সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ‘সিসিমপুর’-এর মতো, ব্লু পিটারও শিশুদের কাছে ছিল খুবই পরিচিত।

বিবিসি জানিয়েছে, দর্শকদের লাইভ অনুষ্ঠান দেখার আগ্রহ কমে যাওয়ায় তারা এই পরিবর্তন আনছে। বর্তমানে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের বিস্তারের কারণে শিশুরা তাদের পছন্দের অনুষ্ঠানগুলো যেকোনো সময় দেখতে পায়।

টিভির পর্দায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে বসে লাইভ অনুষ্ঠান দেখার প্রবণতা এখন অনেকটাই কমে গেছে।

অনুষ্ঠানটির নির্মাতারা বলছেন, দর্শকদের অভিজ্ঞতা খুব বেশি পরিবর্তন হবে না, কারণ ব্লু পিটার দীর্ঘদিন ধরেই ধারণকৃত এবং সরাসরি—উভয় ধরনের অংশ ব্যবহার করে আসছে।

তবে, অনেক দর্শক মনে করেন, সরাসরি সম্প্রচারের একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল, যা এখন হয়তো আর পাওয়া যাবে না।

কারণ, সরাসরি সম্প্রচারে অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটনা ঘটতো, যা দর্শকদের মনে গেঁথে থাকত।

উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬৯ সালে একটি অনুষ্ঠানে ‘লুলু’ নামের একটি হাতির কাণ্ডকারখানা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।

হাতিটি স্টুডিওর ভেতরে দৌরাত্ম্য করে উপস্থাপক এবং অন্যান্য কলাকুশলীদের নাজেহাল করে তোলে। এছাড়াও, ১৯৭২ সালে ‘শেপ’ নামের একটি কুকুরের কারণে এক উপস্থাপকের চামচ বাজানোর পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।

এমন অপ্রত্যাশিত ঘটনাগুলোই ব্লু পিটারকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল।

যদিও লাইভ সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তবে ব্লু পিটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা অনুষ্ঠানের মূল চেতনা ধরে রাখার চেষ্টা করবে।

ভবিষ্যতে কোনো ধারণকৃত পর্বে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তবে সেটিও তারা সম্প্রচার করার কথা ভাবছেন। কারণ, তাদের মতে, অপ্রত্যাশিত ঘটনাই দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করে।

ব্লু পিটার হয়তো তার পুরনো রূপে আর ফিরবে না, তবে এটি এখনো শিশুদের জন্য একটি প্রিয় অনুষ্ঠান হিসেবে টিকে থাকবে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *