গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আল জাজিরার সাংবাদিকসহ দুই গণমাধ্যম কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার উত্তর গাজায় আল জাজিরা মুবাশির চ্যানেলের সাংবাদিক হোসাম শাবাত নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বেইত লাহিয়ার পূর্বাঞ্চলে তার গাড়িতে হামলা চালানো হয়। একই দিনে, খান ইউনিসে ফিলিস্তিন টুডে’র সাংবাদিক মোহাম্মদ মানসুরকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
মানসুরের পরিবারের সদস্যরাও এই হামলায় নিহত হয়েছেন।
আল জাজিরার প্রতিনিধি তারেক আবু আজ্জুম, দেইর আল-বালাহ থেকে জানিয়েছেন, গাজায় এটি ছিল আরও একটি রক্তাক্ত দিন। তিনি আরও জানান, মোহাম্মদ মানসুরকে খান ইউনিসে তার বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে কোনো পূর্ব предупре দেওয়া ছাড়াই ইসরায়েল টার্গেট করে।
হোসাম শাবাতের ওপর ইসরায়েলি হামলার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “গাজার উত্তরে চলমান ভয়াবহ ও নজিরবিহীন পরিস্থিতির মধ্যে শাবাত খবর সংগ্রহের কাজ চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই তার গাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায়।”
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০৮ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, “আমরা আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ফেডারেশন, আরব জার্নালিস্ট ইউনিয়ন এবং বিশ্বের সকল সাংবাদিক সংস্থাকে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের ওপর ইসরায়েলের এই ধারাবাহিক অপরাধের নিন্দা জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি।
আমরা ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, মার্কিন প্রশাসন এবং যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের মতো গণহত্যায় জড়িত দেশগুলোকে এই জঘন্য অপরাধের জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী করছি।”
আল জাজিরার তথ্য অনুযায়ী, সোমবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ জনে। ফিলিস্তিনের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে অবিরাম হামলা অব্যাহত থাকায় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০,০৮২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১৩,৪0৮ জন আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস সোমবার তাদের হালনাগাদ তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজার হাজার ফিলিস্তিনির মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা