দক্ষিণ কোরিয়ার গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি হুন্দাই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে লুইজিয়ানাতে একটি ৫ বিলিয়ন ডলারের স্টিল প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।
হোয়াইট হাউস সূত্রে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
সোমবার হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, হুন্দাই চেয়ারম্যান এইসান চুং এবং লুইজিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রির উপস্থিতিতে এই বিনিয়োগের ঘোষণা আসার কথা রয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ” প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতির ফলস্বরূপ, কঠোর পরিশ্রমী আমেরিকানদের পকেটে আরও বেশি বিনিয়োগ, আরও বেশি চাকরি এবং আরও বেশি অর্থ আসবে।”
জানা গেছে, এই বিনিয়োগ ঘোষণার মূল লক্ষ্য হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ির উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান বাড়বে, তেমনি দেশের অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
তবে, সবকিছু এত সহজ নাও হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ‘স্টেলান্টিস’ নামক একটি কোম্পানি, যারা জিপ, র্যাম, ডজ এবং ক্রাইসলার ব্র্যান্ডের গাড়ি তৈরি করে, তারা শ্রমিক ধর্মঘটের কারণে ২০১৯ সালে বন্ধ করে দেওয়া একটি কারখানা পুনরায় চালু করতে রাজি হয়েছিল।
যদিও এই কারখানার উৎপাদন শুরু হতে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, হুন্দাইয়ের এই বিনিয়োগ ঘোষণা এমন এক সময়ে আসছে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদেশি পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর কথা ভাবছে।
বিশেষ করে, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দেশগুলোর উপর শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা রয়েছে।
হুন্দাই ছাড়াও, তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি এবং জাপানের সফটব্যাঙ্কও যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
অ্যাপলও আগামী চার বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সুবিধা, উৎপাদন এবং প্রকল্পে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা করেছে।
অতীতেও বিভিন্ন কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে বিশাল বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে।
তবে, সব ক্ষেত্রে সেই বিনিয়োগ সফল হয়নি।
উদাহরণস্বরূপ, ২০১৭ সালে ফক্সকন উইসকনসিনে একটি ১০ বিলিয়ন ডলারের ইলেক্ট্রনিক্স কারখানা তৈরির ঘোষণা দিয়েছিল, যেখানে ১৩,০০০ মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে কোম্পানিটি তাদের পরিকল্পনা পরিবর্তন করে এবং কম সংখ্যক মানুষের জন্য কম বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের বিনিয়োগ একদিকে যেমন অর্থনীতির জন্য ভালো, তেমনি তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
বিনিয়োগের ঘোষণা এবং তার বাস্তবায়নের মধ্যে অনেক সময় ব্যবধান থাকে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন