মার্কিন কংগ্রেসে নতুন বাবা-মায়ের জন্য ভোট দেওয়ার নিয়ম পরিবর্তনের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন দুই কংগ্রেস নারী। ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য ব্রিটানি পিটারসেন এবং রিপাবলিকান দলের আনা পাউলিনা লুনা এই পরিবর্তনের জন্য একটি প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন, যা বর্তমানে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
প্রস্তাবটি অনুযায়ী, সন্তানের জন্ম অথবা দত্তক নেওয়ার পর নতুন বাবা-মায়েরা তাদের দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত ‘প্রক্সি ভোটিং’-এর মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসের বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, কোনো সদস্যকে সরাসরি সভায় উপস্থিত হয়েই ভোট দিতে হয়। তবে, নতুন এই প্রস্তাবটি পাস হলে সন্তান জন্ম অথবা দত্তক নেওয়ার কারণে কোনো সদস্যকে ভোট দেওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হবে না।
ব্রিটানি পিটারসেন সম্প্রতি সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে ভোট দিতে যেতে পারেননি এবং এই বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা এমন একটা সময়ে বাস করি যখন নারীরা মা হওয়ার পাশাপাশি তাদের পেশাগত দায়িত্বও পালন করে থাকেন। তাই কংগ্রেসেও এই পরিবর্তনের প্রয়োজন।”
অন্যদিকে, রিপাবলিকান দলের আনা পাউলিনা লুনা মনে করেন, আইনপ্রণেতাদের সন্তান এবং পরিবারকে সময় দেওয়ার পাশাপাশি তাদের নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ থাকা উচিত। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি সমাজের স্বপ্ন দেখি যেখানে একজন মা বা বাবা তাদের সন্তানের জন্য সময় দিতে পারবেন এবং একই সাথে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণেও অংশ নিতে পারবেন।”
তবে, রিপাবলিকান দলের শীর্ষ নেতারা এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছেন। তাদের মতে, এই ধরনের পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের পরিপন্থী এবং এর ফলে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তারা আরও মনে করেন, এর মাধ্যমে ভোট দেওয়ার পুরনো রীতি-নীতিতে পরিবর্তন আসবে এবং এই পদ্ধতির অপব্যবহার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
জানা গেছে, প্রস্তাবটি আইনে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রস্তাবকারীরা। তারা এরই মধ্যে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলের সদস্যদের সমর্থন লাভের জন্য কাজ করছেন। আইনটি পাস হলে তা কর্মজীবী বাবা-মায়ের জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে এবং জনপ্রতিনিধিত্বের ক্ষেত্রে আরও বেশি নমনীয়তা আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পরিবর্তনের ফলে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের নারীরা রাজনীতিতে আরও বেশি আগ্রহী হবেন বলে অনেকে মনে করছেন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন।