বিদেশি ভাষা শেখার নতুন দিগন্ত: চ্যাটবটের সহায়তায় ভাষার দক্ষতা বাড়ানো।
বর্তমান ডিজিটাল যুগে, প্রযুক্তি আমাদের জীবনযাত্রার প্রতিটি দিকে পরিবর্তন এনেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি।
ভাষা শেখার ক্ষেত্রে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই-ভিত্তিক চ্যাটবটগুলি নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। সম্প্রতি, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, স্প্যানিশ ভাষা শেখার জন্য একজন ব্যক্তি কীভাবে একটি এআই চ্যাটবটের সাহায্য নিয়ে উপকৃত হয়েছেন।
দীর্ঘদিন ধরে স্প্যানিশ ভাষা শেখার পর, লেখক উপলব্ধি করেছেন যে প্রথাগত ভাষা শিক্ষার পদ্ধতি, যেমন – ডুওলিঙ্গো-এর মতো অ্যাপগুলি, ভাষা শিক্ষার প্রাথমিক পর্যায়ে সহায়ক হলেও, সাবলীলতা অর্জনে যথেষ্ট নয়।
তাই তিনি এআই চ্যাটবট-এর দিকে ঝুঁকেছেন। এই চ্যাটবটগুলি বাস্তব কথোপকথনের অনুকরণ করে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য ভাষা শেখার প্রক্রিয়াটিকে আরও কার্যকর করে তোলে।
লেখকের মতে, এই চ্যাটবটগুলির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তারা ব্যবহারকারীকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায়।
উদাহরণস্বরূপ, লেখক যখন একটি কঠিন বাক্য বলার চেষ্টা করছিলেন, তখন চ্যাটবটটি তাকে সঠিক শব্দ ব্যবহার করতে এবং ব্যাকরণগত ভুলগুলি সংশোধন করতে সাহায্য করেছে। এর ফলে, ব্যবহারকারীরা তাদের ভুলগুলো সম্পর্কে জানতে পারে এবং দ্রুত শিখতে পারে।
লেখক ল্যাঙ্গুয়া (Langua) নামক একটি এআই চ্যাটবট ব্যবহার করেছেন। এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহারকারীকে ভাষা, ডায়ালেক্ট এবং দক্ষতার স্তর নির্বাচন করার সুযোগ দেয়।
লেখক ফিটনেস প্রশিক্ষক হিসেবে একটি কাল্পনিক পরিস্থিতি তৈরি করেন, যেখানে তিনি একজন ক্লায়েন্টের সাথে স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলছেন। এই অভিনয়ের মাধ্যমে, তিনি তার দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করতে এবং সেগুলোকে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন।
তবে, এই ধরনের চ্যাটবটের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এটি মানুষের মতো আবেগ বা সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট বুঝতে পারে না। লেখকের মতে, একজন মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলার মাধ্যমে যে অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়, তা চ্যাটবটের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়।
মানুষের পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে ভাষা শেখার সুযোগ অনেক বেশি।
এআই চ্যাটবটের আরেকটি সুবিধা হলো এর সাশ্রয়ী মূল্য। ল্যাঙ্গুয়া-এর মাসিক খরচ প্রায় ২৫ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২,৭০০ টাকার সমান।
যেখানে একজন ব্যক্তিগত শিক্ষকের ফি অনেক বেশি হতে পারে।
সবশেষে, লেখক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, এআই চ্যাটবট ভাষা শিক্ষার একটি সহায়ক মাধ্যম হতে পারে।
এটি ভাষা শেখার প্রক্রিয়াটিকে আরও মজাদার এবং কার্যকর করে তোলে। তবে, মানুষের সাথে সরাসরি যোগাযোগের বিকল্প হিসেবে এটিকে বিবেচনা করা উচিত নয়।
ভাষা শিক্ষার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির সংমিশ্রণ প্রয়োজন। যেমন, ক্লাসরুম প্রশিক্ষণ, অনলাইন কোর্স এবং স্থানীয় ভাষা শিক্ষকদের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: The Guardian
