পাথরকে ভালোবাসার স্বীকৃতি! ঝড়ে প্রাণ হারানো ‘মার্ফি’র মৃত্যুতে কান্না

আলোচিত একটি ঘটনা: মুরফি নামের একটি ঈগল পাখি, যা পাথর তা দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিল, সম্প্রতি আমেরিকার মিসৌরিতে এক ঝড়ে মারা গেছে। খবরটি নিশ্চিত করেছে ওয়ার্ল্ড বার্ড স্যাংচুয়ারি কর্তৃপক্ষ।

মুরফির বয়স হয়েছিল ৩৩ বছর।

গত ১৫ই মার্চ, স্যাংচুয়ারির কর্মীরা মুরফিকে মৃত অবস্থায় খুঁজে পান। পশু-চিকিৎসকরা জানান, ঝড়ের কারণে তার মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছিল।

যদিও ঠিক কিভাবে এই আঘাত লেগেছে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, হয়তো ঝড়ের সময় সে কোনো কিছুতে ভয় পেয়ে উড়ে যেতে গিয়ে আঘাত পায়, অথবা ঝড়ের বাতাস বা বৃষ্টির কারণে এমনটা ঘটে থাকতে পারে।

মুরফির এই গল্পটি সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল। কারণ, সে পাথরের ডিমের মতো একটি পাথরের প্রতিপালন করত। এমনকি সে দুটি এতিম ঈগল শাবকের পিতৃত্বও গ্রহণ করেছিল।

ঈগলদের দেখাশোনার ক্ষেত্রে মুরফির এই বিশেষত্ব অনেক মানুষকে আকৃষ্ট করেছিল।

২০২৩ সালে মুরফির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে তাকে একটি পাথরের প্রতিপালন করতে দেখা যায়। এরপর সে সত্যিকারের ঈগল ছানাদের দেখাশোনা করার সুযোগ পায়।

মুরফির এই ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ দেখে অনেকেই মুগ্ধ হয়েছিলেন।

দুর্বল উড়ান ক্ষমতার কারণে মুরফি একটি বিশেষ খাঁচায় থাকত, যেখানে আরও তিনটি পাখি ছিল। ঝড়ে তাদের কোনো ক্ষতি হয়নি।

স্যাংচুয়ারির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের আশ্রয় নেওয়ার ব্যবস্থা ছিল এবং কোনো ঈগলকেই স্থানান্তরিত করতে হয়নি।

মুরফির মৃত্যুর পর, স্যাংচুয়ারি কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে যে, ঈগলদের দেখাশোনার জন্য তাদের যে নতুন অ্যাভিয়ারি তৈরি করা হচ্ছে, তার নাম দেওয়া হবে ‘মুরফিস ম্যানর’। মুরফির স্মৃতিকে চিরকাল বাঁচিয়ে রাখতেই এই উদ্যোগ।

উল্লেখ্য, যে ঝড়ে মুরফির মৃত্যু হয়েছে, সেই একই ঝড় আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি করে গেছে। এতে অন্তত ৪২ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

মুরফির জীবনকাল সাধারণত একটি ঈগলের গড় আয়ুষ্কালের চেয়ে অনেক বেশি ছিল। সাধারণত একটি ঈগল ২০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচে, সেখানে মুরফি ৩৩ বছর বেঁচে ছিল।

মুরফির এই অসামান্য জীবন এবং তার ত্যাগের কথা মানুষ দীর্ঘদিন মনে রাখবে।

তথ্যসূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *