ট্রাম্পের জামাতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ: রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ!

শিরোনাম: ট্রাম্পের জামাতার বিলাসবহুল প্রকল্প: সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ।

সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের একটি বিলাসবহুল আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। সোমবার অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে কুশনারের বিনিয়োগ সংস্থা ‘অ্যাফিনিটি পার্টনার্স’-এর সঙ্গে সার্বিয়ান কর্তৃপক্ষের চুক্তির প্রতিবাদ জানানো হয়।

চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৯৯ সালে কসোভো যুদ্ধের সময় ন্যাটোর বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশটির প্রাক্তন সেনা সদর দফতরকে ভেঙে সেখানে এই বিলাসবহুল প্রকল্প তৈরি করা হবে।

বিক্ষোভকারীরা বিশেষভাবে এই স্থানে নির্মাণকাজ করার বিরোধিতা করছেন। তাদের মতে, এটি ন্যাটোর বোমা হামলার স্মৃতিচিহ্ন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এই স্থানটিকে হেরিটেজ সাইট হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে এবং উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে।

তারা মনে করেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পন্ন একটি স্থান ধ্বংস করা হচ্ছে।

বিক্ষোভকারীরা সার্বিয়ার বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এবং গণতন্ত্রকে দুর্বল করছে। বিক্ষোভকারীরা দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিকের নীতিরও তীব্র প্রতিবাদ জানান।

গত ১২ বছর ধরে ভুসিক হয় প্রধানমন্ত্রী, না হয় প্রেসিডেন্ট পদে আসীন আছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতি ও স্বৈরাচারী আচরণের অভিযোগ উঠেছে।

এই প্রকল্পের প্রতিবাদে হওয়া বিক্ষোভটি ছিল প্রেসিডেন্ট ভুসিকের সরকারের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ের বৃহত্তম প্রতিবাদগুলোর মধ্যে অন্যতম। এর আগে, নভেম্বরে নোভিসাদের একটি রেলস্টেশনের ছাদ ভেঙে ১৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায়ও ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছিল।

বিক্ষোভকারীরা এই দুর্ঘটনার জন্য সরকারের দুর্নীতি ও নির্মাণ সুরক্ষার প্রতি অবজ্ঞা ছিল বলে অভিযোগ করেন।

এছাড়াও, সরকারের বিতর্কিত লিথিয়াম খনি প্রকল্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই খনি জল দূষণ ঘটাবে এবং জনস্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।

সার্বিয়া একদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক বজায় রাখে, অন্যদিকে রাশিয়ার সঙ্গেও সম্পর্ক রেখে চলে। তবে দেশটির ঝোঁক অনেক বছর ধরেই মস্কোর দিকে বেশি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, কুশনারের এই প্রকল্পের মাধ্যমে সার্বিয়ার সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে চাইছে। তবে এর ফলে দেশের ঐতিহ্য ও পরিবেশের উপর যে প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে জনমনে উদ্বেগ রয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *