ধাক্কা! বড় লোকসানে জেনেটিক পরীক্ষার কোম্পানি, মুখ থুবড়ে পড়ল ব্যবসা!

শিরোনাম: জেনেটিক পরীক্ষার সংস্থা ২৩এন্ডমি দেউলিয়া হওয়ার পথে, বাড়ছে গ্রাহকদের তথ্য সুরক্ষার উদ্বেগ

যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিচিত জেনেটিক পরীক্ষা বিষয়ক সংস্থা, ২৩এন্ডমি, দেউলিয়া সুরক্ষা চেয়ে আবেদন করেছে। তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসার চাহিদা কমে যাওয়া, সেই সাথে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনার কারণে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কোম্পানিটি।

সান ফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি এখন তাদের সম্পদ বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।

কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান ওজিস্কি পদত্যাগ করেছেন। তবে তিনি দেউলিয়া প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে ২৩এন্ডমি’র সম্পদ কেনার জন্য বিড করার কথা জানিয়েছেন।

এদিকে, দেউলিয়া ঘোষণার কয়েক দিন আগে, ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বোন্টা গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে সতর্ক করেন এবং তাদের ডেটা মুছে ফেলার কথা বিবেচনা করতে বলেন।

২০২১ সালে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজারমূল্য নিয়ে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে গঠিত কোম্পানির (SPAC) মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছিল ২৩এন্ডমি। ডিএনএ পরীক্ষার কিটগুলির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সে বছর এর বাজার মূল্য প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল।

কিন্তু পরবর্তীতে, গ্রাহক সংখ্যা কমে যাওয়ায় কোম্পানিটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। বিশ্লেষকদের মতে, বংশগতীয় পরীক্ষার কিটের বাজার সম্ভবত প্রায় শেষের দিকে।

২০২৩ সালে, হ্যাকাররা ২৩এন্ডমি’র প্রায় ৭০ লক্ষ গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়। এই ঘটনার ফলে গ্রাহকদের মধ্যে তাদের গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ে, যা কোম্পানির ভাবমূর্তির ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।

পরে এই ঘটনার সাথে জড়িত একটি মামলার নিষ্পত্তিতে ২৩এন্ডমিকে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে হয়।

কোম্পানিটি ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং মানুষের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের ভবিষ্যৎ পরিবর্তন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। গ্রাহকদের বংশগত পরিচয় জানার আগ্রহের কারণে তাদের তৈরি করা মুখের লালার মাধ্যমে ডিএনএ পরীক্ষার কিট ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।

পরবর্তীতে স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা এবং ওষুধ তৈরিতেও তারা মনোযোগ দেয়।

তবে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ২৩এন্ডমি’র জন্য পরিস্থিতি খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না। তথ্য ফাঁসের ঘটনার বাইরেও, কোম্পানির ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

এমনকি, গ্রাহকদের তাদের ডেটা মুছে ফেলার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। নভেম্বরে, কোম্পানিটি তাদের কর্মী বাহিনীর ৪০ শতাংশ ছাঁটাই করার ঘোষণা দেয় এবং তাদের চিকিৎসা বিষয়ক বিভাগ বন্ধ করে দেয়।

২৩এন্ডমি’র দেউলিয়া হওয়ার এই ঘটনা ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা এবং ডেটা সুরক্ষার গুরুত্বের বিষয়টি আবারও সামনে নিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশেও যেহেতু অনলাইনে পরিষেবা এবং ডেটা ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে, তাই ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ব্যবহারকারীদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন, যাতে তারা তাদের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় আরও বেশি মনোযোগ দেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *