শিরোনাম: লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে বিপর্যয়, হাজারো যাত্রীর দুর্ভোগ, তালিকায় বাঙালিও?
শুক্রবার লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ ঘটনার জেরে বিশ্বজুড়ে হাজারো বিমানযাত্রীর জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বিমানবন্দরের কাছে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লাগার কারণে এই অচলাবস্থা তৈরি হয়, যার ফলস্বরূপ বাতিল হয় বহু বিমান, কিছু বিমানের গতিপথ পরিবর্তন করা হয়, এবং চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
এই ঘটনার জেরে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ছিলেন হানিমুনে যাওয়া এক দম্পতি থেকে শুরু করে জরুরি কাজে যাত্রা করা সাধারণ মানুষ।
জানা গেছে, কাতার থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া একটি বিমানের যাত্রী বিলি এবং রিচার্ড তাদের মধুচন্দ্রিমা উদযাপন শেষে ফিরছিলেন। বিমানের পাইলট যখন ঘোষণা করেন যে হিথরোর বিদ্যুতের সমস্যার কারণে তাদের বিমান জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অবতরণ করবে, তখন তারা ঘুমিয়ে ছিলেন।
বিলি সিএনএন-কে জানান, ঘুম থেকে উঠে যখন তিনি জানতে পারেন যে তারা লন্ডনে নয়, ফ্রাঙ্কফুর্টে নামছেন, তখন তাদের হতাশ হওয়া ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।
এই ঘটনার শিকার হওয়া যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন কিম মিক্কেল স্কিব্রেক নামের এক ব্যক্তি, যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত বাবাকে দেখতে ওসলো যাচ্ছিলেন। এছাড়া, একই ফ্লাইটে থাকা অ্যাবি হার্টজ নামের এক নারী তার পরিবারকে নিয়ে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লন্ডনে যাচ্ছিলেন। তাদের সকলেরই ভ্রমণ পরিকল্পনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অন্তত মধ্যরাত পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এই ঘটনার প্রভাব শুধু ইউরোপেই সীমাবদ্ধ ছিল না। দূরপাল্লার অনেক বিমানকেও তাদের যাত্রা বাতিল করতে বা দিক পরিবর্তন করতে হয়।
বিমানের কর্মীরাও এই পরিস্থিতিতে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। যাত্রীদের অভিযোগ, বিমানবন্দরের কর্মীরাও ঘটনার আকস্মিকতায় দিশেহারা হয়ে পড়েন এবং তাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য ছিল না।
এই ধরনের ঘটনা আমাদের দেশের যাত্রাপথেও অপ্রত্যাশিত দুর্ভোগের কথা মনে করিয়ে দেয়। যেমন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায়ই আমাদের দেশের নৌ-পরিবহন এবং বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
এছাড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনার কারণেও অনেক সময় ভ্রমণকারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হন।
লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের এই ঘটনার পর অনেক যাত্রী বিকল্প পথে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বিলি এবং রিচার্ড নামের ওই দম্পতিও ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে ব্রাসেলস হয়ে ট্রেনে করে লন্ডনে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নেন।
তাদের মতো হাজারো যাত্রী তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন উপায় খুঁজে বের করতে বাধ্য হন।
হিথরোর এই ঘটনার পর বিমান সংস্থাগুলো তাদের যাত্রীদের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে, এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনার মোকাবিলায় তাদের প্রস্তুতি আরও উন্নত করা প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: সিএনএন