জাপানের একটি আদালত দীর্ঘ ৪৬ বছর মৃত্যুদণ্ডের আদেশে বন্দী থাকার পর মুক্তি পাওয়া এক ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১.৪ মিলিয়ন ডলার প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনার মাধ্যমে দেশটির বিচার ব্যবস্থার দুর্বল দিকটি আবারও সামনে এসেছে।
১৯৮৯ বছর বয়সী ইওয়াও হাকামাদা নামের ওই ব্যক্তিকে ১৯৬৬ সালে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
ঘটনাটি ছিল এমন—ইওয়াও হাকামাদা নামের এক প্রাক্তন বক্সারকে একটি পরিবারের চার সদস্যকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে বন্দী থাকার পর, অবশেষে আদালত তাকে নির্দোষ ঘোষণা করে এবং ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
আদালতের তথ্য অনুযায়ী, হাকামাদাকে তার কারাবাসের প্রতিটি দিনের জন্য ৮৩ ডলার করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, শিযোকা জেলা আদালত সম্প্রতি জানিয়েছে যে, পুলিশের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই হাকামাদাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। আদালত আরও জানায়, হাকামাদার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য অমানবিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল, যা পরে তিনি প্রত্যাহার করে নেন।
এই মামলার রায় জাপানের ইতিহাসে ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে একটি রেকর্ড।
দীর্ঘ সময় ধরে কারাগারে বন্দী থাকার কারণে হাকামাদার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়েছিল। তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তিনি এক প্রকার “কল্পনার জগতে” বাস করতেন।
হাকামাদার বোন দীর্ঘদিন ধরে তার ভাইয়ের মুক্তির জন্য লড়াই করেছেন, যা এই সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
উল্লেখ্য, জাপানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মৃত্যুদণ্ডের রায় পাওয়া আসামীদের মধ্যে এই নিয়ে পঞ্চম ব্যক্তির বিচার প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু করা হলো এবং তাদের সবাইকেই পরে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনাগুলো জাপানের বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা এবং মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগ নিয়ে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান