আলো ঝলমলে চিত্রশিল্পী থমাস কিনকেড: খ্যাতি, অর্থ আর পতনের এক গল্প।
মার্কিন চিত্রশিল্পী থমাস কিনকেড, যিনি “আলোর চিত্রকর” হিসেবে পরিচিত, তাঁর ছবিগুলো একসময় সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল। তাঁর আঁকা ছবিগুলি ছিল শান্ত, স্নিগ্ধ প্রকৃতির, যা অনেকের কাছে আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল।
কিন্তু খ্যাতি আর বাণিজ্যের মোহে একসময় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর জীবন, কর্ম এবং আকস্মিক মৃত্যু নিয়ে সম্প্রতি নির্মিত একটি তথ্যচিত্র, “আর্ট ফর এভরিবডি”, শিল্পীর জীবনের নানা দিক উন্মোচন করেছে।
কিনকেডের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ছিল সাধারণ, কিন্তু তাঁর স্বপ্ন ছিল আকাশছোঁয়া। নব্বইয়ের দশকে তাঁর ছবিগুলি এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, ক্যালেন্ডার থেকে শুরু করে শুভেচ্ছা কার্ড, এমনকি তাঁর ছবির আদলে তৈরি বাড়ি পর্যন্ত তৈরি হয়েছিল।
২০০০ সালের দিকে তাঁর ব্যবসার পরিমাণ ছিল প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে এই সাফল্যের পেছনে লুকিয়ে ছিল এক অন্য গল্প। অতিরিক্ত মদ্যপান, নারীদের প্রতি অসদাচরণ এবং ব্যবসার অংশীদারদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ তাঁর খ্যাতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।
“আর্ট ফর এভরিবডি” তথ্যচিত্রে পরিচালক মিরান্ডা ইউসেফ কিনকেডের জীবনের এই দিকগুলো তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে একজন শিল্পী নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করতে গিয়ে এক জটিলতার শিকার হন।
তথ্যচিত্রে কিনকেডের শৈশব, শিল্পী হওয়ার পেছনের গল্প এবং তাঁর শিল্পের বাণিজ্যিকীকরণের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। কিনকেডের আর্ট ছিল মূলত শ্বেতাঙ্গ এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষের রুচি ও চাহিদার প্রতি ориенти।
কিনকেডের খ্যাতি ছিল বিশাল, কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ছিল বিপর্যস্ত। অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে তিনি একাধিকবার সমালোচিত হন। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগও উঠেছিল।
খ্যাতি আর সাফল্যের শিখরে থেকেও তিনি যেন এক সোনার খাঁচায় বন্দী ছিলেন। তথ্যচিত্রটি সেই বিষয়গুলি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে।
কিনকেডের জীবন আমাদের মনে করিয়ে দেয় খ্যাতির মোহ কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। এই তথ্যচিত্রটি একজন মানুষের উত্থান এবং পতনের গল্প বলে, যা একইসঙ্গে শিল্প, বাণিজ্য এবং সমাজের সম্পর্ককে নতুন করে বুঝতে সাহায্য করে।
তথ্য সূত্র: The Guardian