মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিছু মায়ের মধ্যে গাঁজা সেবনের প্রবণতা বাড়ছে, এমনটাই উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক খবরে। এই মায়েদের দাবি, নিয়মিত গাঁজা সেবন তাঁদের ভালো মা হতে সাহায্য করে।
‘ক্যানামম’ নামে পরিচিত এই মায়েদের একাংশ মনে করেন, এর মাধ্যমে তাঁরা মানসিক চাপ ও উদ্বেগের সঙ্গে আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে পারেন এবং সন্তানদের প্রতি আরও মনোযোগী হতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে, বিশেষ করে যেখানে বিনোদনমূলক গাঁজা ব্যবহারের অনুমতি আছে, সেখানকার মায়েদের মধ্যে এই প্রবণতা বাড়ছে। তারা বলছেন, গাঁজা তাঁদের ধৈর্যশীল করে তোলে, উদ্বেগ কমায় এবং সন্তানদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে মিশতে সাহায্য করে।
এর ফলে তাঁরা সন্তানদের প্রতি আরও বেশি সময় দিতে পারেন।
সেন্ট লুইসের বাসিন্দা কিম্বার্লি কেস্টারসন নামের এক নারী, যিনি ‘এসটিএল ক্যানামমস’ নামক একটি গোষ্ঠীর সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর মতে, গাঁজা সেবনের কারণে তিনি সন্তানদের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটান এবং তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন কাজে যুক্ত হতে পারেন।
তবে, এই বিষয়ে বিতর্কও রয়েছে। অনেকে মনে করেন, গাঁজা সেবন ক্ষতিকর এবং এটি ভালো অভিভাবকত্বের পরিপন্থী।
মাদকদ্রব্য ব্যবহারকারীরা শিশুদের প্রতি অমনোযোগী হন এবং তাঁদের মধ্যে বিচারবুদ্ধির অভাব দেখা দিতে পারে। কেউ কেউ মনে করেন, এর ফলে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও খারাপ প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাঁজা সেবনের ফলে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়তে পারে। এছাড়াও, এর কারণে একজন মানুষের স্বাভাবিক বিচার ক্ষমতা কমে যেতে পারে, যা শিশুদের প্রতি মনোযোগ দিতে সমস্যা তৈরি করে।
তবে, ‘ক্যানামম’-দের দাবি, তাঁরা অল্প পরিমাণে গাঁজা সেবন করেন, যা তাঁদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাঁরা মনে করেন, এর মাধ্যমে তাঁরা সমাজের একজন ভালো সদস্য হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।
এই প্রসঙ্গে, শনিট্রিয়া অ্যান্থনি নামের একজন সাংবাদিক এবং ‘ব্লান্ট ব্লোইন’ মামা’ নামে একটি পডকাস্টের হোস্ট বলেন, গাঁজা সেবনের কারণে তিনি শান্ত থাকেন এবং ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা সাবরিনা গুরeroও মনে করেন, গাঁজা সেবনের ফলে তিনি তাঁর সন্তানদের সঙ্গে আরও ভালোভাবে মিশতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গাঁজার ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে, তবে এর ভালো-মন্দ দুটো দিকই রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কিছু ইতিবাচক দিক পাওয়া গেলেও, মাদক হিসেবে এর অপব্যবহারের ঝুঁকিও রয়েছে।
তাই, এই ধরনের বিতর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে সমাজে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন