যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বিতাড়নের জন্য চাপ সৃষ্টি করছে বেতার ইউএস নামের একটি সংগঠন। প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে এই বিতাড়ন প্রক্রিয়া আরও জোরদার হয়।
ইসরায়েলপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে বেতার ইউএস অন্যতম, যারা ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের নাম ট্রাম্প প্রশাসনের কাছে সরবরাহ করে।
বেতার ইউএস-এর মূল সংগঠন হলো বেতার, যা ১৯২৩ সালে জিওনিস্ট নেতা জে’ভ জ্যাবোটিনস্কি প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠন নিজেদের ‘আগ্রাসী’ এবং ‘স্পষ্টবাদী’ হিসেবে বর্ণনা করে। তাদের ওয়েবসাইটে তারা জানায়, তারা সারা বিশ্বে শাখা বিস্তার করেছে এবং বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রেও তাদের কার্যক্রম চলছে।
বেতার ইউএস-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে এবং তাদের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে হয়রানি করছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েল বিরোধীতাকে তারা ইহুদি বিদ্বেষের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মুক্ত মত প্রকাশের অধিকারকে খর্ব করছে।
বেতার ইউএস-এর কার্যক্রম নিয়ে সমালোচকেরা বলছেন, তাদের ওয়েবসাইটে নেতৃত্বের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য নেই। এছাড়া, তারা কর ছাড়ের সুবিধাও ভোগ করে। মানবাধিকার আইনজীবীরা মনে করেন, এর মাধ্যমে তারা দায়বদ্ধতা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
বেতার ইউএস-এর পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম মেনেই কাজ করে এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে যারা বিতাড়িত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য হুমকি স্বরূপ। তবে, বিতর্ক উঠেছে, কর্তৃপক্ষের কাছে এমন কোনো প্রমাণ আছে কিনা, যা বিতাড়নের কারণ হতে পারে।
ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বিতাড়নের হুমকির পাশাপাশি, বেতার ইউএস গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। তাদের সামাজিক মাধ্যমে গাজায় ফিলিস্তিনি শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনে, ভিসাধারী বা নাগরিকত্ব পাওয়া কেউ যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ দেয়, তবে তাদের বিতাড়ন করা যেতে পারে। তবে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো মনে করে, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ মুক্তভাবে কথা বলার অধিকারের পরিপন্থী।
বেতার ইউএস-এর কার্যক্রম এবং ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের বিতাড়নের চেষ্টা, যুক্তরাষ্ট্রে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের অধিকারের প্রতি নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা