রাজনৈতিক অঙ্গনে নারী সংসদ সদস্যদের প্রতি সহিংসতা ও যৌন হয়রানির চিত্র এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে আন্তঃসংসদীয় ইউনিয়ন (আইপিইউ)।
মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, রাজনীতিতে নারীদের ওপর সহিংসতা ও হয়রানির ব্যাপকতা গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুতর হুমকি।
প্রতিবেদনটি তৈরিতে অস্ট্রেলিয়া, মঙ্গোলিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং মাইক্রোনেশিয়া সহ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৩৩টি দেশের নারী সংসদ সদস্য (এমপি) ও সংসদীয় কর্মীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এতে দেখা গেছে, ৭৬ শতাংশ এমপি এবং ৬৩ শতাংশ সংসদীয় কর্মী মানসিক লিঙ্গ ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
এছাড়া, প্রায় ৬০ শতাংশ এমপি অনলাইনে বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য, মিথ্যা তথ্য এবং ছবি-সংক্রান্ত সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতি চারজনের মধ্যে একজন নারী যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি ঘটনা ঘটেছে সংসদ ভবনের ভেতরে, যেখানে পুরুষ সংসদ সদস্যরা জড়িত ছিলেন।
অনেক ক্ষেত্রে, নারীদের রাজনীতিতে তাদের স্থান দুর্বল করার জন্য বা তাদের কণ্ঠরোধ করার উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা ঘটানো হয়।
রাজনীতিতে নারীদের ওপর সহিংসতা ও লিঙ্গ বৈষম্য গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত। সংসদীয় স্থানগুলো সুস্থ বিতর্ক ও আইন প্রণয়নের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হওয়া উচিত।
প্রতিবেদনের লেখক ব্রিজিত ফিলিয়ন এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, “নারীদের নিরাপত্তা, তাদের দায়িত্ব পালনে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়।
যদিও কিছু দেশে হয়রানি প্রতিরোধের জন্য নিয়ম তৈরি করা হয়েছে, তবে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে এখনো কোনো বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয়নি। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এই অঞ্চলের মাত্র ৩৭টি দেশের মধ্যে ১৬টিতে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি প্রতিরোধের আইন রয়েছে।
আইপিইউ’র আরেকটি পুরনো গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বের ৮০ শতাংশের বেশি এমপি মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে অপমানজনক মন্তব্য।
আর প্রায় ২০ শতাংশ নারী যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান