দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ এবং ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির প্রেক্ষাপটে: সাহায্য কমানোর ফল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী একজন শ্বেতাঙ্গ দক্ষিণ আফ্রিকান নাগরিক সম্প্রতি আল জাজিরায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরেছেন। নিবন্ধটিতে লেখক বিশেষভাবে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং এলন মাস্কের দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্কে দেওয়া ধারণার সমালোচনা করেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্য নীতি বা ‘এপার্টহাইড’-এর সময়কালে লেখক এবং এলন মাস্কের শৈশব একই সময়ে কেটেছে। লেখক উল্লেখ করেছেন যে, মাস্কসহ আরও কয়েকজন শ্বেতাঙ্গ প্রভাবশালী ব্যক্তি, যাদের দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে, তারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা পিটার থিয়েল এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা ডেভিড স্যাকস। লেখক এদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে নিজের ভিন্নতা তুলে ধরেছেন।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে লেখক জানান, বর্ণবাদের অবসানের পর দক্ষিণ আফ্রিকার অগ্রগতি হয়েছে, বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে এই উন্নতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৯০-এর দশকে, যখন দক্ষিণ আফ্রিকা বর্ণবাদ থেকে গণতন্ত্রের দিকে যাচ্ছিল, তখন তিনি সেখানকার একটি রেডিও স্টেশনে সাংবাদিক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি সেই সময়ের সকলের মধ্যেকার আনন্দ ও গর্বের অনুভূতি প্রত্যক্ষ করেছেন, যখন সকল বর্ণের মানুষ তাদের প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ভোট দিয়েছিল।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের একটি সিদ্ধান্তের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য সাহায্য কমানো হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে লেখক বলেছেন, এই ধরনের পদক্ষেপ দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে এই সাহায্য কমানোর ফলে দেশটির স্বাস্থ্যখাতে, বিশেষ করে এইডস রোগীদের চিকিৎসায় মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
লেখকের মতে, এলন মাস্ক এবং ট্রাম্পের দক্ষিণ আফ্রিকা সম্পর্কে দেওয়া ধারণা তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে মেলে না। তিনি মনে করেন, দক্ষিণ আফ্রিকার মানুষ গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার এবং ‘উবুন্টু’ ধারণার (আমরা সবাই পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং একে অপরের প্রতি দায়বদ্ধ) মাধ্যমে ভালো ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। লেখকের মতে, বর্তমানে ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা সংখ্যালঘু হলেও, অতীতে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ তাদের বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা