হোয়াইট হাউস সিক্রেট চ্যাট: ফাঁস হওয়া খবরে তোলপাড়!

হোয়াইট হাউজের গোপন চ্যাট: বিতর্কিত সামরিক পরিকল্পনা ফাঁস

যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ‘সিগন্যাল’ গ্রুপ চ্যাটে মার্কিন শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি গোপন সামরিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের কথোপকথন এবং গোপনীয়তা রক্ষার দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

ফাঁস হওয়া চ্যাটে, ফক্স নিউজের উপস্থাপক এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা পিট হেগসেথকে আলোচনার মূল উদ্যোক্তা হিসেবে দেখা যায়। তিনি ইয়েমেনে হাউছি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে জোরালো মত দেন। এমনকি, কোনো কারণে এই অভিযান বিলম্বিত হলে, এর সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কেও তিনি সতর্ক করেন।

হেগসেথের মতে, “কয়েক সপ্তাহ বা এক মাস অপেক্ষা করলে পরিস্থিতির মৌলিক কোনো পরিবর্তন হবে না। বরং এতে দুটি ঝুঁকি রয়েছে: এক, তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে আমরা দুর্বল প্রমাণ হব; দুই, ইসরায়েল যদি আগে কোনো পদক্ষেপ নেয়, অথবা গাজায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে যায়, তাহলে আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু করতে পারব না।”

চ্যাটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন প্রতিরক্ষা বিভাগের সাবেক উপদেষ্টা জে ডি ভান্স। তিনি অবশ্য এই বিষয়ে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন। ভান্সের মতে, ইউরোপের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সম্পর্ক বিবেচনা করে, এমন একটি পদক্ষেপ নেওয়া হলে তা যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হবে না। তিনি আরও আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এর ফলে তেলের দাম বাড়তে পারে।

ভান্স আলোচনার শুরুতে বলেন, “আমি মনে করি না প্রেসিডেন্ট বর্তমান পরিস্থিতিতে ইউরোপের বিষয়ে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে অবগত আছেন। যদি আমরা এখনই এই পদক্ষেপ নিই, তাহলে তেলের দাম বাড়তে পারে।”

এছাড়াও, ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিফেন মিলারকেও এই চ্যাটে সক্রিয় থাকতে দেখা যায়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যে ইয়েমেনে হামলার বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছেন। মিলারের মতে, “প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত পরিষ্কার ছিল: সবুজ সংকেত। তবে এর বিনিময়ে মিশর এবং ইউরোপের কাছ থেকে কী প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তা দ্রুত পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়াও, কীভাবে এই শর্তগুলো কার্যকর করা যায়, তা নির্ধারণ করতে হবে।”

চ্যাটে আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির উপস্থিতি ছিল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ, যিনি ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় জড়িত। এছাড়াও ছিলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ সুসি ওয়াইলস।

এই গোপন চ্যাট ফাঁস হওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, এতে সামরিক পরিকল্পনার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান-প্রদান হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের গোপন আলোচনা ফাঁস হওয়ার ফলে, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *