ভুল করলে বিপদ! আইআরএ’র ১০টি মারাত্মক ভুল!

বিনিয়োগ ও অবসর পরিকল্পনা: যা মনে রাখা জরুরি।

প্রত্যেক মানুষেরই ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য একটি নিশ্চিত আর্থিক সুরক্ষার প্রয়োজন। আর এই সুরক্ষা অর্জনের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের ধারণা।

উন্নত বিশ্বে অবসর গ্রহণের জন্য বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগ প্রকল্প চালু আছে, যেমন – ইন্ডিভিজুয়াল রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্ট বা সংক্ষেপে আইআরএ (IRA)। যদিও বাংলাদেশে সরাসরি এমন কোনো ব্যবস্থা নেই, তবে অবসর পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যা জানা থাকলে আমাদের দেশের মানুষের জন্যেও তা বিশেষভাবে সহায়ক হবে।

দেরিতে শুরু করলে ক্ষতি।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনি যত আগে থেকে বিনিয়োগ শুরু করবেন, আপনার টাকার পরিমাণ তত দ্রুত বাড়বে।

অনেক সময় দেখা যায়, আমরা হাতে টাকা আসার পরে, অথবা বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে বিনিয়োগ শুরু করতে দেরি করি। এতে আপনার বিনিয়োগের ওপর পাওয়া সুদ বা মুনাফার পরিমাণ কমতে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ, ধরুন, আপনি যদি আপনার কর্মজীবনের শুরুতে, অর্থাৎ ২০ বছর বয়সে সামান্য কিছু টাকা বিনিয়োগ করা শুরু করেন, তবে আপনার অবসর জীবনে একটি বড় অঙ্কের তহবিল তৈরি হতে পারে।

অন্যদিকে, যদি আপনি ৪০ বছর বয়সে বিনিয়োগ শুরু করেন, তবে একই পরিমাণ টাকা জমা করতে আপনাকে অনেক বেশি চেষ্টা করতে হবে।

সঠিক বিনিয়োগের ধারণা।

অবসর গ্রহণের জন্য সঞ্চয় করার সময়, কোন খাতে বিনিয়োগ করলে আপনার জন্য ভালো হবে, তা বুঝে নিতে হবে। এই ক্ষেত্রে, বিভিন্ন ধরনের সরকারি এবং বেসরকারি সঞ্চয় প্রকল্প, শেয়ার বাজার, বন্ড অথবা ফিক্সড ডিপোজিটের মতো বিকল্পগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে।

টাকা জমা দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কর সুবিধা (tax benefit)। আমাদের দেশেও এমন কিছু সঞ্চয় প্রকল্প রয়েছে, যেখানে বিনিয়োগ করলে কর ছাড় পাওয়া যায়।

এই ধরনের স্কিমগুলো আপনার করের বোঝা কমাতে সাহায্য করে এবং একই সাথে আপনার সঞ্চয় বাড়াতে সহায়তা করে।

ভুল ধারণা পরিহার করুন।

বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু ভুল ধারণা আমাদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়। যেমন, অনেকে মনে করেন, সব ধরনের বিনিয়োগ একই রকম এবং সব ক্ষেত্রেই একই পরিমাণ লাভ পাওয়া যায়।

এছাড়াও, অনেকেই স্বল্প মেয়াদে বেশি লাভের আশায় ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে টাকা লাগান। তবে মনে রাখতে হবে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি এবং রিটার্নের মধ্যে একটি সম্পর্ক রয়েছে।

বেশি লাভের জন্য ঝুঁকিও বেশি হতে পারে, আবার কম ঝুঁকিতে কম লাভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার গুরুত্ব।

অবসর জীবনের জন্য পরিকল্পনা করার সময়, দীর্ঘমেয়াদী একটি কৌশল তৈরি করা প্রয়োজন। আপনার বর্তমান আর্থিক অবস্থা, ভবিষ্যৎ চাহিদা এবং বাজারের পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিনিয়োগ পরিকল্পনা সাজানো উচিত।

এই ক্ষেত্রে, বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই পরামর্শ দেন, বিভিন্ন খাতে আপনার বিনিয়োগকে ভাগ করে নেওয়া উচিত। এতে একটি খাতে ক্ষতি হলেও, অন্য খাত থেকে লাভের সম্ভাবনা থাকে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

অবসর পরিকল্পনা একটি জটিল বিষয়। আপনার আর্থিক লক্ষ্য এবং ঝুঁকির প্রোফাইল অনুযায়ী সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন।

এক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ আর্থিক পরামর্শকের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। তিনি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত বিনিয়োগ কৌশল তৈরি করতে পারবেন এবং আপনাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সহায়তা করবেন।

পরিশেষে, একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য এখনই পরিকল্পনা শুরু করা উচিত। সঠিক বিনিয়োগ, সময় মতো পদক্ষেপ এবং সচেতনতা আপনাকে আর্থিক নিরাপত্তা দিতে পারে।

তথ্য সূত্র:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *