যাজকদের যৌন নির্যাতনের শিকারদের চাঞ্চল্যকর পদক্ষেপ! কার্ডিনালদের বিরুদ্ধে…

ক্যাথলিক চার্চের যাজকদের যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের একটি সংগঠন পোপ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে কার্ডিনালদের (Cardinal) রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য একটি ডেটাবেস তৈরি করেছে। সংগঠনটি একইসঙ্গে পোপ ফ্রান্সিসকে (Pope Francis) যুক্তরাষ্ট্রে বিদ্যমান নীতির আদলে বিশ্বব্যাপী ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।

খবরটি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি।

যাজকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের সংগঠন ‘সারভাইভার্স নেটওয়ার্ক অফ দোজ অ্যাবিউজড বাই প্রিস্টস’ (এসএনএপি) ‘কনক্লেভ ওয়াচ’ নামে পরিচিত এই ডেটাবেসটি তৈরি করেছে। ডেটাবেসে কার্ডিনালদের এমন রেকর্ড রাখা হবে যেখানে তাঁরা কীভাবে যাজকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলো পরিচালনা করেছেন, সেই তথ্য থাকবে।

এসএনএপি আশা করছে, পরবর্তী পোপ নির্বাচনের সময় এই ডেটাবেসের বিষয়গুলো বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে।

সংগঠনটি জানিয়েছে, ডেটাবেসে প্রাথমিকভাবে ছয়জন কার্ডিনালের তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে নির্বাচন করা হয়েছে কারণ তাঁরা রোমান ক্যাথলিক চার্চে যাজকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের ঘটনার সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

পরবর্তীতে আরও কার্ডিনালের তথ্য যুক্ত করা হবে।

এসএনএপি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হল, পোপ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য কার্ডিনালদের যৌন নির্যাতনের মামলাগুলো তারা কীভাবে পরিচালনা করেছেন, তা যাচাই করা।

এর মধ্যে তাঁরা কোনো ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিনা, কিংবা এসএনএপি’র প্রস্তাবিত ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণে তাঁদের সমর্থন আছে কিনা, তা দেখা হবে।

সংগঠনটি পোপ ফ্রান্সিসকে একটি চিঠিও দিয়েছে। চিঠিতে তারা ক্যানন ও দেওয়ানি আইনজীবী এবং মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে মিলে তৈরি করা ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের জন্য পোপকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছে।

এই নীতি অনুযায়ী, যৌন নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত যাজকদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সঙ্গে জড়িত বিশপদের জবাবদিহি করতে হবে।

এসএনএপি’র পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বে শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই এই ধরনের নীতি বিদ্যমান রয়েছে, যেখানে যৌন নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত যাজকদের সরিয়ে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।

এই প্রসঙ্গে তারা উল্লেখ করে, বিশ্বের ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের মাত্র ৬ শতাংশ মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে বাস করে।

অর্থাৎ, ৯৪ শতাংশ মানুষের জন্য এখনো এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই।

সংগঠনটি আশা করছে, চিলির (Chile) একজন ভুক্তভোগী জুয়ান কার্লোস ক্রুজকে (Juan Carlos Cruz) দিয়ে তারা পোপের কাছে এই চিঠিটি পৌঁছে দিতে পারবে।

ক্রুজকে পোপ নির্যাতিতদের আন্তর্জাতিক মুখপাত্র হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।

এসএনএপি জোর দিয়ে বলেছে, পোপের শারীরিক সুস্থতার এই সময়ে বিষয়টি উত্থাপন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কারণ, ফেব্রুয়ারিতে তিনি শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে একটি নির্দেশিকা তৈরির ঘোষণা করেছিলেন।

এসএনএপি চায়, তাদের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিষয়টি যেন সেখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এসএনএপি’র পক্ষ থেকে পিটার আইসলি (Peter Isley) বলেন, “আমরা তাঁর (পোপ) দ্রুত আরোগ্য কামনা করি, কারণ আমাদের একসঙ্গে অনেক কাজ করতে হবে।”

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *