ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত পদে ট্রাম্পের পছন্দের হ্যাকা বির্তক থেকে বাঁচতে দৌড়ঝাঁপ!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইসরায়েলে মনোনীত মাইক হাকাবি তার অতীতের ফিলিস্তিন সংক্রান্ত মন্তব্যের জেরে বিতর্কের মুখে পড়েছেন।

সিনেটে শুনানিতে তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অগ্রাধিকারের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল থাকবেন, নিজের ব্যক্তিগত মতাদর্শ সেখানে মুখ্য হবে না।

জানা গেছে, ট্রাম্প ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ এই পদে হাকাবিকে মনোনীত করেছেন, যিনি একজন পরিচিত খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী এবং ইসরায়েলের একনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত।

গাজায় ১৭ মাস ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার কয়েক দিন পরেই এই নিয়োগ দেন।

যদিও সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির পর, ইসরায়েলি বাহিনী গত সপ্তাহে গাজায় বিমান হামলার মাধ্যমে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার পরে, যুক্তরাষ্ট্র এবং আরব দেশগুলো একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।

রিপাবলিকান সিনেটররা ইসরায়েলের প্রতি হাকাবির সমর্থনের প্রশংসা করলেও, ডেমোক্র্যাটরা ফিলিস্তিনিদের সম্পর্কে তার অতীতের কিছু বক্তব্যকে ‘চরমপন্থী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের নীতি বিরুদ্ধ।

এমনকি কিছু ইসরায়েলপন্থী গোষ্ঠীও হাকাবির এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছে।

আর্কানসাসের সাবেক গভর্নর হাকাবি অবশ্য ইসরায়েলের পশ্চিম তীরকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করার অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

তবে তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে এই বিষয়ে তার কোনো ভূমিকা থাকবে না।

ডেমোক্রেট সিনেটর জেফ মার্কলের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “যদি আমার নিয়োগ নিশ্চিত হয়, তবে প্রেসিডেন্টের অগ্রাধিকারগুলো বাস্তবায়ন করাই হবে আমার দায়িত্ব, আমার নিজের কোনো নীতি সেখানে গুরুত্বপূর্ণ নয়।”

হাকাবি অতীতে ‘যিহূদা ও শমরিয়া’ নামে পরিচিত পশ্চিম তীরকে বাইবেলের নামে উল্লেখ করার পক্ষেও মত দিয়েছেন, যা ডানপন্থী ইসরায়েলি রাজনীতিবিদ ও কর্মীরা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দীর্ঘদিন ধরে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন।

তবে ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি স্পষ্ট করেননি।

এছাড়াও, হাকাবি দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ধারণার বিরোধিতা করে আসছেন।

গত বছর এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমনকি ব্রিটিশ শাসিত ফিলিস্তিনে বসবাস করা আরব বংশোদ্ভূতদের ‘ফিলিস্তিনি’ হিসেবে উল্লেখ করতেও নারাজ ছিলেন।

অন্যদিকে, পানামার রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত হয়েছেন কেভিন ক্যাব্রেরা।

তিনি দেশটির পানামা খালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার আগ্রহের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

যদিও পানামা সরকার এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।

প্যানামার রাষ্ট্রদূত পদে ক্যাব্রেরার মনোনয়ন এবং হাকাবির ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন, উভয় ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কর্মকর্তাদের অতীতের বক্তব্য এবং তাদের বর্তমান ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে এবং পানামার মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে এইসব বিষয় বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *