প্রিন্স হ্যারির প্রতিষ্ঠিত আফ্রিকান দাতব্য সংস্থা থেকে পদত্যাগ, হতবাক রাজকুমার।
ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি, যিনি ২০০৬ সালে আফ্রিকার দরিদ্র ও এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত শিশুদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ‘সেনটেবেল’ নামের একটি দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, সেই সংস্থা থেকে পদত্যাগ করেছেন। সম্প্রতি সংস্থাটির অভ্যন্তরে হওয়া কিছু মতবিরোধের জের ধরে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
খবরটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রিন্স হ্যারি এবং লেসোথোর প্রিন্স সিইসো দুজনেই মঙ্গলবার থেকে তাদের পৃষ্ঠপোষকের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। জানা গেছে, ট্রাস্টিদের সঙ্গে সংস্থার চেয়ার, ড. সোফি চান্দাউকার মধ্যে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়, যার ফলশ্রুতিতে এই পদত্যাগ।
ড. চান্দাউকাকে ২০২৩ সালে চেয়ার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
সংস্থা সূত্রে জানা যায়, মূলত আফ্রিকার জন্য তহবিল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েই এই বিরোধের সূত্রপাত। প্রিন্স হ্যারি ও প্রিন্স সিইসো এক যৌথ বিবৃতিতে জানান, “ট্রাস্টিরা সংস্থার স্বার্থে এবং কর্মীদের কল্যাণে চেয়ারকে পদত্যাগ করার কথা বলেছিলেন। আমরা তাদের এই পদক্ষেপের জন্য গভীরভাবে দুঃখিত।”
তারা আরও বলেন, “যা ঘটেছে তা অভাবনীয়। আমরা স্তম্ভিত যে, আমাদের এমনটা করতে হচ্ছে। তবে সেনটেবেলের সুবিধাভোগীদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই কীভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হলো, সে বিষয়ে আমরা দাতব্য কমিশনকে আমাদের উদ্বেগের কথা জানাবো।”
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ডিউক অফ সাসেক্স হিসেবে পরিচিত প্রিন্স হ্যারি তার মা, প্রিন্সেস ডায়ানার স্মরণে লেসোথোতে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেন।
রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর হ্যারির হাতে থাকা কয়েকটি ব্যক্তিগত পৃষ্ঠপোষকতার মধ্যে এটি ছিল অন্যতম।
সেনটেবেলের প্রাক্তন ট্রাস্টি টিমোথি বাউচার, মার্ক ডাইয়ার, অড্রে কগোসিদন্তসি, কেলিলো লেরোথোলি এবং ড্যামিয়ান ওয়েস্ট এক বিবৃতিতে জানান, “বোর্ডের চেয়ারের প্রতি আস্থা হারানোর কারণে আমাদের এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।”
সংস্থাটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা উভয় রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকের পদত্যাগপত্র পাননি। তারা আরও বলেন, “আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, গত বছর ঘোষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেনটেবেলের রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করতে ২৫শে মার্চ, ২০২৫ তারিখে বোর্ডের পুনর্গঠন করা হবে।”
এ বিষয়ে ড. চান্দাউকা বলেন, “সেনটেবেলে আমি যা কিছু করি, তা সংস্থার অখণ্ডতা, এর উদ্দেশ্য এবং আমরা যাদের সেবা করি, সেই তরুণদের জন্য। আমার কাজগুলি সকলের জন্য ন্যায়বিচার এবং সমতার নীতির দ্বারা পরিচালিত হয়, যা সামাজিক মর্যাদা বা আর্থিক সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে।”
বিষয়টি নিয়ে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে চ্যারিটি কমিশন জানায়, তারা সেনটেবেলের পরিচালনা সংক্রান্ত উদ্বেগের বিষয়ে অবগত আছে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান