মার্কিন সামরিক পরিকল্পনার ফাঁস: মিত্র দেশগুলোর মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ‘ফাইভ আইস’ গোয়েন্দা জোটের সদস্য দেশগুলো। এই জোটের সদস্য হিসেবে রয়েছে কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড।
ফাঁস হওয়া গোপনীয় সামরিক তথ্যের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্র দেশগুলোর মধ্যে আস্থার সম্পর্ককে নতুন করে পরীক্ষার মুখে ফেলেছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সম্প্রতি এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, মিত্র দেশগুলোকে এখন থেকে নিজেদের সুরক্ষার বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘটনা খুবই উদ্বেগের। কিভাবে এই ধরনের ভুলগুলো শুধরানো যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
‘ফাইভ আইস’ মূলত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যেকার একটি শক্তিশালী গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের জোট।
এই জোটের নিরাপত্তা দুর্বল হয়ে পড়লে তা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বড় উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর মন্ত্রী লুক পোলার্ড এই বিষয়ে বলেন, ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীর কোনো সদস্যের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েনি।
তবে, তিনি আরও জানান, যুক্তরাজ্যের সামরিক কর্মীরা তাদের স্বাভাবিক নিরাপত্তা বিধির অধীনে রয়েছেন।
নিউজিল্যান্ডের পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো মন্তব্য করা না হলেও, দেশটির সাবেক মন্ত্রী অ্যান্ড্রু লিটল এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক বিভিন্ন সময়ের সরকারের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাই এই সম্পর্ক দীর্ঘমেয়াদে কিভাবে বজায় রাখা যায়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ রবার্ট প্যাটম্যান এই নিরাপত্তা লঙ্ঘনকে ‘অস্বাভাবিক’ এবং ‘উদাসীনতা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময়ে অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের ফলস্বরূপ এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপনীয় তথ্য সুরক্ষার মানদণ্ড নিয়ে নিয়মিতভাবে আলোচনা করে থাকে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা ‘ফাইভ আইস’ জোটের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে এবং ভবিষ্যতে তথ্য আদান-প্রদানে আরও সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।