দাবানলে ধ্বংস দক্ষিণ কোরিয়া! ১৯ জনের মৃত্যু, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি!

দক্ষিণ কোরিয়ায় দাবানল: ১৯ জনের মৃত্যু, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন

দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং প্রায় ২৭,০০০ মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে এবং কয়েক হাজার একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

উত্তাল বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং দেশটির দক্ষিণ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কর্মকর্তাদের মতে, উইসেং শহরে আগুন নেভানোর সময় একটি হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হলে পাইলটসহ আরও কয়েকজনের মৃত্যু হয়। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে উইসেং অন্যতম।

গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এই দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে প্রায় ১৭,৫৩৫ হেক্টর (৪৩,৩৩০ একর) জমির ওপরের বনভূমি আগুনে পুড়ে গেছে। এছাড়াও, প্রাচীন একটি বৌদ্ধ মন্দিরসহ ঘরবাড়ি, কলকারখানা, গাড়ি এবং অন্যান্য সম্পত্তি আগুনে ধ্বংস হয়ে গেছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, আগুনে ১৯ জন আহত হয়েছেন।

আগুনের কারণে কয়েকটি শহর ও অঞ্চলের বাসিন্দাদের মঙ্গলবার নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দমকলকর্মীরা আগুন নেভানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সবচেয়ে বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে আংডং, উইসেং ও সানচেং এবং উলসান শহরে।

উইসেংয়ে অবস্থিত সপ্তম শতকে নির্মিত গউংসা বৌদ্ধ মন্দিরের প্রায় অর্ধেক কাঠামো আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মন্দিরের ভেতরে থাকা দুটি ঐতিহাসিক স্থাপনা—১৬৬৮ সালে নির্মিত একটি প্যাভিলিয়ন এবং ১৯০৪ সালে নির্মিত একটি প্রাসাদও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অষ্টম শতাব্দীর একটি পাথরের বুদ্ধ মূর্তি নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে, চেওংসং শহরে সতর্কতা হিসেবে একটি ডিটেনশন সেন্টারের ৫০০ বন্দীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সৌভাগ্যবশত, ডিটেনশন সেন্টারের কোনো ক্ষতি হয়নি।

মঙ্গলবার, দেশটির বন বিভাগ দাবানলের সতর্কতা সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত করেছে। এর ফলে স্থানীয় সরকারগুলোকে জরুরি অবস্থার জন্য অতিরিক্ত জনবল মোতায়েন করতে, বনাঞ্চলে প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে এবং সামরিক ইউনিটগুলোকে লাইভ-ফায়ার অনুশীলন স্থগিত করার সুপারিশ করতে হয়েছে।

এছাড়াও, সানচেংয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়া আগুনে আটকা পড়ে চারজন দমকলকর্মী ও সরকারি কর্মচারী নিহত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক সমাধিস্থলে আগাছা পরিষ্কার করার জন্য আগুন ধরানো অথবা ওয়েল্ডিংয়ের কারণে সৃষ্ট স্ফুলিঙ্গ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *