যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (এনআইএইচ) জলবায়ু পরিবর্তনের স্বাস্থ্যগত প্রভাব নিয়ে গবেষণা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতির অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের গবেষণা সহ বিভিন্ন বিষয়ে অর্থায়ন হ্রাস করার ইঙ্গিত দেয়।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এনআইএইচ, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রধান গবেষণা সংস্থা, প্রতি বছর স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণার জন্য বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে থাকে। অতীতে সংস্থাটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে গবেষণা প্রকল্পের জন্য অনুদান দিয়েছে।
কিন্তু নতুন নির্দেশনার ফলে, ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গবেষণা প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এমন গবেষণা প্রকল্পের উপর গুরুত্ব দিতে চায় যা সরাসরি আমেরিকানদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে চরম আবহাওয়া বাড়ছে, যেমন— ঘূর্ণিঝড়, তাপপ্রবাহ, দাবানল এবং বন্যা। এর ফলে জনস্বাস্থ্যে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের স্বাস্থ্যগত প্রভাবগুলো নিয়ে গবেষণা অত্যন্ত জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। অতিরিক্ত বৃষ্টি, বন্যা ও লোনা পানির কারণে ডায়রিয়া, কলেরা, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগ বাড়ছে।
তীব্র গরমের কারণে হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ছে, যা দেশের মানুষের জীবনকে আরও কঠিন করে তুলছে।
আগে, বাইডেন প্রশাসনের আমলে, জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রমের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এই খাতে অর্থায়নের জন্য কংগ্রেস থেকে বাজেটও বরাদ্দ করা হয়েছিল।
কিন্তু বর্তমানে সেই কার্যক্রমগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা সংস্থাগুলোর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব পড়ছে, তা জানতে গবেষণা চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই গবেষণাগুলো রোগ প্রতিরোধের উপায় খুঁজে বের করতে এবং মানুষের জীবন বাঁচাতে সহায়ক হবে।
তারা মনে করেন, এনআইএইচ-এর এই সিদ্ধান্ত বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণা কার্যক্রমের জন্য একটি বড় ধাক্কা।
আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এনআইএইচ-এর এই সিদ্ধান্তের ফলে, উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন